সামনে জীবন বাঁচানো কঠিন: শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৭:০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২
- / 392
অর্থনৈতিক সঙ্কটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সঙ্কটে বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কায় পেট্রোল ফুরিয়ে গেছে এবং প্রয়োজনীয় আমদানির জন্য ডলার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দেউলিয়া হয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কা আগামী দিনে আরও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, আমাদের পেট্রোল ফুরিয়ে গেছে.. এই মুহূর্তে আমাদের কাছে মাত্র আর এক দিনের পেট্রোল মজুত আছে। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর সোমবার প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
নতুন এই লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকার তেলের তিনটি চালানের অর্থ পরিশোধের জন্য ডলার সংগ্রহ করতেও অক্ষম হয়েছে। অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় বর্তমানে জাহাজগুলো থেকে কার্গো নামানো যাচ্ছে না। এসব জাহাজ কলম্বো বন্দরের বাইরে অপেক্ষা করছে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কা। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানিতে নেমে যাওয়া এর অন্যতম প্রধান কারণ।
করোনাভাইরাস মহামারি, উচ্চাভিলাষী ও অলাভজনক বিভিন্ন প্রকল্পে সরকারের বিনিয়োগ, ত্রুটিপূর্ণ করনীতি ও সরকারি অব্যবস্থাপনার কারণে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
এর ফলে অনেকদিন ধরে জ্বালানি তেল, খাদ্য, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করতে পারছে না দেশটি। ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শ্রীলঙ্কার গণপরিবহন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশটির জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রাণঘাতী হয়ে ওঠায় প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ক্ষমতা ছাড়ার পর গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি বলেছেন, আগামী কয়েক মাস আমাদের জীবনের জন্য সবচেয়ে কঠিন হবে। সত্যকে আড়াল করার এবং জনগণের কাছে মিথ্যা বলার কোনও ইচ্ছা আমার নেই।
তবে দেশটির জনগণকে ধৈর্যসহ আগামী কয়েক মাস সহ্য করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারি ১৪ লাখ বেসামরিক কর্মচারীর মে মাসের বেতন পরিশোধের নগদ অর্থও শেষ হয়ে গেছে এবং তিনি শেষ অবলম্বন হিসেবে অর্থ ছাপানোর পথে হাঁটবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে আমি সরকারি কর্মীদের বেতন এবং প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবার ব্যয় প্রদানের জন্য অর্থ ছাপানোর অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছি।
জ্বালানি ও বিদ্যুতের শুল্ক যথেষ্ট পরিমাণে বাড়ানো হবে এবং লোকসান কমাতে দেনায় থাকা সরকারের জাতীয় বিমান সংস্থা বিক্রি করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।