শ্রমবাজার টিকিয়ে রাখতে হলে পশ্চিম ইউরোপে কর্মী পালানো বন্ধ করতে হবে

  • আপডেট সময় : ১০:৫৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / 73
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এশিয়া কন্টিনেন্টালের আরো ২৯ দক্ষ কর্মী রোমানিয়া যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইতালী, পোল্যান্ড, রোমানিয়াসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশের জনশক্তির বাজার দিন দিন চাঙ্গা হচ্ছে। পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়াতে সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিক যাওয়ার হারও বেড়েছে।
এরমধ্যে সবচেয়ে বেশী শ্রমিক পাঠিয়েছে ঢাকার উত্তর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনের (গুলশান-২) এশিয়া কন্টিন্টেনাল গ্রুপ (বিডি)।
শ্রমিক পাঠানোর ধারাবাহিকতায় এবারো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রনালয়ের সকল নির্দেশনা এবং নিয়ম মেনে আরো ২৯ জনকে রোমানিয়ায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে রিক্রুটিং এজেন্সী ।


হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, সোমবার রাত পৌণে ৮টায় কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ২৯ দক্ষ কর্মী রোমানিয়ার উদ্দেশে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন। এসময় এশিয়া কন্টিন্টেটাল গ্রুপ বিডির ম্যানেজার আব্দুস সালামসহ একটি প্রতিনিধি দল তাদেরকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম জানান, ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক রিক্রুটিং এজেন্সী মেসার্স এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ (বিডি) আর এল-৫২৩ এর আবেদনের প্রেক্ষিতে রোমানিয়াস্থ ফেরাকসিও কন্সট্রাকশন এসআরএল কোম্পানীর জন্য মোট ৬০০ জন পুরুষ কর্মীর নিয়োগ অনুমতি প্রদান করেন। কোম্পানীর চাহিদা অনুসারে এজেন্সীর নিজস্ব ট্রেনিং সেন্টার জে আই ইসলামিক সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইন্সটিটিউট এ দক্ষতা অর্জনের জন্য ফ্রি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে গত জুলাই মাসে কোম্পানীর প্রতিনিধি কর্তৃক বাছাই পর্বে ৮০ জন দক্ষ কর্মী নির্বাচিত হয়। এরমধ্যে সবার ভিসা ভারতের রোমানিয়ান দুতাবাসের মাধ্যমে ইস্যু করা হয় এবং বিএমইটি কর্তৃক সবার বর্হিগমন ছাড়পত্র নেয়া হয়।
তিনি বলেন, নিয়োগকারী কোম্পানীতে ৫৫০ ইউএস ডলার বেতনে ২ বছরের চুক্তিতে (নবায়নযোগ্য) দৈনিক ৮ ঘন্টা করে সপ্তাহে ৬ দিন কাজের শর্তে কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। শর্ত মোতাবেক ভিসা, থাকা, খাওয়া বাসস্থান পোশাক ও বীমা রেসিডেন্স পারমিট নিয়োগকারী কোম্পানী বহন করবে। কর্মীদের বিদেশ যাওয়া বাবদ সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা অভিবাসন ব্যয় হচ্ছে বলে জানান আব্দুস সালাম।
রোমানিয়ার শ্রমবাজারের ভবিষ্যত সর্ম্পকে জানতে চাইলে মেসার্স এশিয়া কন্টিন্টোল গ্রুপ (বিডি) এর কর্ণধার লোকমান শাহ বলেন, পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়াতে ২০০৭-২০০৯ সাল পর্যন্ত আমরাই সর্বপ্রথম বৈধভাবে রোমানিয়াতে শ্রমিক প্রেরণ করেছিলাম। ২০০৯ সালের পর বাংলাদেশী কর্মীদের পশ্চিম ইউরোপে যাওয়ার প্রবনতার কারণে রোমানিয়া সরকার দেশটিতে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিলো। এরপর বিভিন্নভাবে চেষ্টা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রৈমাত্রিক কুটনৈতিক সফলতা হিসাবে ২০১৭ সালে আবারো রোমানিয়ায় কর্মী প্রেরনের দ্বার উম্মুক্ত হয়। ওই সময় কর্মী যাওয়া শুরু হলেও তা ছিলো সীমিত। এরমধ্যে করোনা মহামারীর কারণে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। অনেক চড়াই উতরাই পেরোনোর পর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী এবং সিনিয়র সচিব মহোদয়ের আন্তরিকতায় ২০২২ সালে পুরো দমে আবারো দেশটিতে কর্মী যাওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। এরমাঝে ২০২২ সালে বাংলাদেশে অস্থায়ী কন্সুলেট টিম ঢাকায় অফিস স্থাপন করে ভিসা কার্যক্রম শুরু করলে কাজের গতি বেড়ে যায়। ৩ মাস পর কন্সুলেট টিম চলে যাওয়ার পর আবারো কাজের গতিতে ভাটা পড়ে যায়। তবে অত্যন্ত আনন্দের খবর হচ্ছে, রোমানিয়ার অস্থায়ী কন্সুলেট টীম আবারো আগামী মাসে (মার্চে) বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। তারা আসলে আবারো কাজের গতি বাড়বে বলে জানান এশিয়া কন্টিন্টেনাল গ্রুপি বিডির কর্ণধার লোকমান শাহ। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রোমানিয়ার শ্রমবাজার ধরে রাখতে হলে বাংলাদেশী শ্রমিকদের পালিয়ে পশ্চিম ইউরোপে চলে যাওয়ার প্রবনতা ঠেকাতে হবে। এব্যাপারে সরকারের সাথে সাথে যেসব বৈধ এজেন্সী রোমানিয়াতে শ্রমিক পাঠানোর সাথে সম্পৃত্ত তাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। সবাইকে অবৈধ অভিবাসনের বিপক্ষে কাধে কাধ মিলিয়ে চলতে হবে। তবেই এই শ্রমবাজার ধরে রাখা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

শ্রমবাজার টিকিয়ে রাখতে হলে পশ্চিম ইউরোপে কর্মী পালানো বন্ধ করতে হবে

আপডেট সময় : ১০:৫৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

এশিয়া কন্টিনেন্টালের আরো ২৯ দক্ষ কর্মী রোমানিয়া যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইতালী, পোল্যান্ড, রোমানিয়াসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশের জনশক্তির বাজার দিন দিন চাঙ্গা হচ্ছে। পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়াতে সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিক যাওয়ার হারও বেড়েছে।
এরমধ্যে সবচেয়ে বেশী শ্রমিক পাঠিয়েছে ঢাকার উত্তর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনের (গুলশান-২) এশিয়া কন্টিন্টেনাল গ্রুপ (বিডি)।
শ্রমিক পাঠানোর ধারাবাহিকতায় এবারো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রনালয়ের সকল নির্দেশনা এবং নিয়ম মেনে আরো ২৯ জনকে রোমানিয়ায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে রিক্রুটিং এজেন্সী ।


হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, সোমবার রাত পৌণে ৮টায় কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ২৯ দক্ষ কর্মী রোমানিয়ার উদ্দেশে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন। এসময় এশিয়া কন্টিন্টেটাল গ্রুপ বিডির ম্যানেজার আব্দুস সালামসহ একটি প্রতিনিধি দল তাদেরকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম জানান, ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক রিক্রুটিং এজেন্সী মেসার্স এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ (বিডি) আর এল-৫২৩ এর আবেদনের প্রেক্ষিতে রোমানিয়াস্থ ফেরাকসিও কন্সট্রাকশন এসআরএল কোম্পানীর জন্য মোট ৬০০ জন পুরুষ কর্মীর নিয়োগ অনুমতি প্রদান করেন। কোম্পানীর চাহিদা অনুসারে এজেন্সীর নিজস্ব ট্রেনিং সেন্টার জে আই ইসলামিক সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইন্সটিটিউট এ দক্ষতা অর্জনের জন্য ফ্রি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে গত জুলাই মাসে কোম্পানীর প্রতিনিধি কর্তৃক বাছাই পর্বে ৮০ জন দক্ষ কর্মী নির্বাচিত হয়। এরমধ্যে সবার ভিসা ভারতের রোমানিয়ান দুতাবাসের মাধ্যমে ইস্যু করা হয় এবং বিএমইটি কর্তৃক সবার বর্হিগমন ছাড়পত্র নেয়া হয়।
তিনি বলেন, নিয়োগকারী কোম্পানীতে ৫৫০ ইউএস ডলার বেতনে ২ বছরের চুক্তিতে (নবায়নযোগ্য) দৈনিক ৮ ঘন্টা করে সপ্তাহে ৬ দিন কাজের শর্তে কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। শর্ত মোতাবেক ভিসা, থাকা, খাওয়া বাসস্থান পোশাক ও বীমা রেসিডেন্স পারমিট নিয়োগকারী কোম্পানী বহন করবে। কর্মীদের বিদেশ যাওয়া বাবদ সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা অভিবাসন ব্যয় হচ্ছে বলে জানান আব্দুস সালাম।
রোমানিয়ার শ্রমবাজারের ভবিষ্যত সর্ম্পকে জানতে চাইলে মেসার্স এশিয়া কন্টিন্টোল গ্রুপ (বিডি) এর কর্ণধার লোকমান শাহ বলেন, পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়াতে ২০০৭-২০০৯ সাল পর্যন্ত আমরাই সর্বপ্রথম বৈধভাবে রোমানিয়াতে শ্রমিক প্রেরণ করেছিলাম। ২০০৯ সালের পর বাংলাদেশী কর্মীদের পশ্চিম ইউরোপে যাওয়ার প্রবনতার কারণে রোমানিয়া সরকার দেশটিতে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিলো। এরপর বিভিন্নভাবে চেষ্টা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রৈমাত্রিক কুটনৈতিক সফলতা হিসাবে ২০১৭ সালে আবারো রোমানিয়ায় কর্মী প্রেরনের দ্বার উম্মুক্ত হয়। ওই সময় কর্মী যাওয়া শুরু হলেও তা ছিলো সীমিত। এরমধ্যে করোনা মহামারীর কারণে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। অনেক চড়াই উতরাই পেরোনোর পর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী এবং সিনিয়র সচিব মহোদয়ের আন্তরিকতায় ২০২২ সালে পুরো দমে আবারো দেশটিতে কর্মী যাওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। এরমাঝে ২০২২ সালে বাংলাদেশে অস্থায়ী কন্সুলেট টিম ঢাকায় অফিস স্থাপন করে ভিসা কার্যক্রম শুরু করলে কাজের গতি বেড়ে যায়। ৩ মাস পর কন্সুলেট টিম চলে যাওয়ার পর আবারো কাজের গতিতে ভাটা পড়ে যায়। তবে অত্যন্ত আনন্দের খবর হচ্ছে, রোমানিয়ার অস্থায়ী কন্সুলেট টীম আবারো আগামী মাসে (মার্চে) বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। তারা আসলে আবারো কাজের গতি বাড়বে বলে জানান এশিয়া কন্টিন্টেনাল গ্রুপি বিডির কর্ণধার লোকমান শাহ। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রোমানিয়ার শ্রমবাজার ধরে রাখতে হলে বাংলাদেশী শ্রমিকদের পালিয়ে পশ্চিম ইউরোপে চলে যাওয়ার প্রবনতা ঠেকাতে হবে। এব্যাপারে সরকারের সাথে সাথে যেসব বৈধ এজেন্সী রোমানিয়াতে শ্রমিক পাঠানোর সাথে সম্পৃত্ত তাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। সবাইকে অবৈধ অভিবাসনের বিপক্ষে কাধে কাধ মিলিয়ে চলতে হবে। তবেই এই শ্রমবাজার ধরে রাখা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করছেন।