ঢাকা ০১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশি নির্যাতনের শিকার ফটো সাংবাদিক নুরুল আজম

  • আপডেট সময় : ০৫:৩০:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২
  • / 264
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

​ দৈনিক সাঙ্গু’র ফটো সাংবাদিক নুরুল আজম পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে খুলশী থানার কনস্টেবল অভিজিত পুলিশের অভিযানের ছবি তুলনার সময় ক্যামরা কেড়ে নিয়ে ছবি মুছে ফেলতে চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে কনস্টেবল অভিজিত ফটো সাংবাদিক আজমকে জোর পূর্বক পুলিশ ভ্যানে তুলে মারধর করেন। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ফটো সাংবাদিক আজম সিএমপি কমিশনারের কাছে গত ২৭ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ করেন। ​ অভিযোগ সূত্রে জানায়, গত ২৬ অক্টোবর রাত ১১:১৫টার দিকে ’দৈনিক সাঙ্গু’ অফিসের কাজ শেষ আম বাগান এ.কে.খান এলাকায় নিজের বাড়িতে যাওয়ার পথে টাইগার পাস এলাকায় খুলশী থানার ৫ জন পুলিশ ধর ধর চিৎকার করে দৌড়ান। এসময় আরও লোকজন জমায়েত হতে থাকে। আমিও পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে হাতে থাকা ক্যামরা বের করে ছুবি এবং ভিডিও ধারণ করি। ঘটনার বিয়ষ জানার জন্য পুলিশকে সহযোগিতা করতে ফটো সাংবাদিক আজম এগিয়ে যান। পুলিশের দৌড়ানির পর আটক হওয়া ব্যক্তির সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি জোরাজোরি করলে ফটো সাংবাদিক আজম নিজের পরিচয় দিয়ে খুলশী থানার এসআই মাইনুলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন। এ সময় কনস্টেবল অভিজিৎ হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করে শার্টের কলার ধরে পুলিশের ভ্যানে জোর করে তুলে নেয়। গাড়িতে তোলার পর পুনরায় পরিচয় দিয়ে আইডি কার্ড দেখানো হলে এস আই মাইনুলের নির্দেশে সাংবাদিক আজমের মোবাইল ও আইডি কার্ড কেড়ে নেয়। এস আই মাইনুলের নির্দেশে কনস্টেবল অভিজিৎ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। এ সময়ও এস আই মাইনুল উপস্থিত থাকলেও নীরব ভূমিকা পালন করে। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশের অন্যায় নির্যাতনের বিষয়টি বিষয়টি জানতে পেরে শতশত উত্তেজিত লোকজন পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে ফটো সাংবাদিক নুরুল আজমকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। আহত ফটো সাংবাদিক নুরুল আজম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বাড়িতে চিকিৎসাধিন রয়েছে। ​ হামলার বিষয়ে আহত ফটো সাংবাদিক নুরুল আজম বলেন, আমি পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় এস আইন মাইনুলের উপস্থিতিতে কনস্টেবল অভিজিত আমাকে মারধর করে ক্যামরা এবং আইডি কার্ড কেড়ে নিয়ে জোর পূর্বক পুলিশের ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করে। পুলিশ আমার উপর অন্যায় এবং নির্যাতনের বিষয়টি স্থানীয় শতশত জনতা জানতে পেরে তারা প্রতিবাদ জানালে পুলিশ আমাকে ভ্যান থেকে নামিয়ে দেয়। আমি ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে সিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।কমিশনার মহোদায় বিচার না করলে সিনিয়র সাংবাদিকদের পরামর্শে প্রয়োজনে আমি মামলা করব। চট্টগ্রাম রিপোর্টার ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর নুর বলেন, সাংবাদিক নুরুল আজমের উপর পুলিশের হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ প্রতিবাদে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার হুশিয়ারী দেন। এ ঘটনার বিষয়ে খুলশী এস আই মাইনুল জানান, কনস্টেবল অভিজিত ছেলেটা বেয়াদব হিসেবে সবাই জানে, আমার সাথে থেকে অভিজিত যে ঘটনা ঘটিয়েছে এটা কোন অবস্থাতে কাম্য ছিল না, আমি মাত্র খুলশী থানায় যোগদান করছি কয়েকদিন হচ্ছে। সাংবাদিকের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমি কোন অবস্থাতে দায় এড়াতে পারে না বলে স্বীকার করেন, তবে আমি উভয় জনকে মিমাংসা করে দেয়ার জন্য চেষ্টা করছি, আমি কয়েকবার সরিও বলছি, ঐ দিনের ঘটনার জন্য আমার ডিপার্টমেন্টের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। এ বিষয়ে খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, অভিযুক্ত কনস্টেবল অভিজিত পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে অন্যায় করেছে, উনাকে আমরা কোন অবস্থাতে সমর্থন দিতে পারি না। বিয়ষটি আমি জানার পর কমিশনার স্যারকে জানিয়েছি, উনার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল শাস্তিমুলক যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার সেটা নেয়ার জন্য বলছি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

পুলিশি নির্যাতনের শিকার ফটো সাংবাদিক নুরুল আজম

আপডেট সময় : ০৫:৩০:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২

​ দৈনিক সাঙ্গু’র ফটো সাংবাদিক নুরুল আজম পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে খুলশী থানার কনস্টেবল অভিজিত পুলিশের অভিযানের ছবি তুলনার সময় ক্যামরা কেড়ে নিয়ে ছবি মুছে ফেলতে চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে কনস্টেবল অভিজিত ফটো সাংবাদিক আজমকে জোর পূর্বক পুলিশ ভ্যানে তুলে মারধর করেন। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ফটো সাংবাদিক আজম সিএমপি কমিশনারের কাছে গত ২৭ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ করেন। ​ অভিযোগ সূত্রে জানায়, গত ২৬ অক্টোবর রাত ১১:১৫টার দিকে ’দৈনিক সাঙ্গু’ অফিসের কাজ শেষ আম বাগান এ.কে.খান এলাকায় নিজের বাড়িতে যাওয়ার পথে টাইগার পাস এলাকায় খুলশী থানার ৫ জন পুলিশ ধর ধর চিৎকার করে দৌড়ান। এসময় আরও লোকজন জমায়েত হতে থাকে। আমিও পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে হাতে থাকা ক্যামরা বের করে ছুবি এবং ভিডিও ধারণ করি। ঘটনার বিয়ষ জানার জন্য পুলিশকে সহযোগিতা করতে ফটো সাংবাদিক আজম এগিয়ে যান। পুলিশের দৌড়ানির পর আটক হওয়া ব্যক্তির সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি জোরাজোরি করলে ফটো সাংবাদিক আজম নিজের পরিচয় দিয়ে খুলশী থানার এসআই মাইনুলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন। এ সময় কনস্টেবল অভিজিৎ হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করে শার্টের কলার ধরে পুলিশের ভ্যানে জোর করে তুলে নেয়। গাড়িতে তোলার পর পুনরায় পরিচয় দিয়ে আইডি কার্ড দেখানো হলে এস আই মাইনুলের নির্দেশে সাংবাদিক আজমের মোবাইল ও আইডি কার্ড কেড়ে নেয়। এস আই মাইনুলের নির্দেশে কনস্টেবল অভিজিৎ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। এ সময়ও এস আই মাইনুল উপস্থিত থাকলেও নীরব ভূমিকা পালন করে। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশের অন্যায় নির্যাতনের বিষয়টি বিষয়টি জানতে পেরে শতশত উত্তেজিত লোকজন পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে ফটো সাংবাদিক নুরুল আজমকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। আহত ফটো সাংবাদিক নুরুল আজম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বাড়িতে চিকিৎসাধিন রয়েছে। ​ হামলার বিষয়ে আহত ফটো সাংবাদিক নুরুল আজম বলেন, আমি পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় এস আইন মাইনুলের উপস্থিতিতে কনস্টেবল অভিজিত আমাকে মারধর করে ক্যামরা এবং আইডি কার্ড কেড়ে নিয়ে জোর পূর্বক পুলিশের ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করে। পুলিশ আমার উপর অন্যায় এবং নির্যাতনের বিষয়টি স্থানীয় শতশত জনতা জানতে পেরে তারা প্রতিবাদ জানালে পুলিশ আমাকে ভ্যান থেকে নামিয়ে দেয়। আমি ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে সিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।কমিশনার মহোদায় বিচার না করলে সিনিয়র সাংবাদিকদের পরামর্শে প্রয়োজনে আমি মামলা করব। চট্টগ্রাম রিপোর্টার ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর নুর বলেন, সাংবাদিক নুরুল আজমের উপর পুলিশের হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ প্রতিবাদে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার হুশিয়ারী দেন। এ ঘটনার বিষয়ে খুলশী এস আই মাইনুল জানান, কনস্টেবল অভিজিত ছেলেটা বেয়াদব হিসেবে সবাই জানে, আমার সাথে থেকে অভিজিত যে ঘটনা ঘটিয়েছে এটা কোন অবস্থাতে কাম্য ছিল না, আমি মাত্র খুলশী থানায় যোগদান করছি কয়েকদিন হচ্ছে। সাংবাদিকের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমি কোন অবস্থাতে দায় এড়াতে পারে না বলে স্বীকার করেন, তবে আমি উভয় জনকে মিমাংসা করে দেয়ার জন্য চেষ্টা করছি, আমি কয়েকবার সরিও বলছি, ঐ দিনের ঘটনার জন্য আমার ডিপার্টমেন্টের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। এ বিষয়ে খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, অভিযুক্ত কনস্টেবল অভিজিত পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে অন্যায় করেছে, উনাকে আমরা কোন অবস্থাতে সমর্থন দিতে পারি না। বিয়ষটি আমি জানার পর কমিশনার স্যারকে জানিয়েছি, উনার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল শাস্তিমুলক যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার সেটা নেয়ার জন্য বলছি