মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ: গতি বাড়ছে দূতাবাসের সত্যায়নে

  • আপডেট সময় : ০৪:২২:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / 121
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মি নিয়োগে, দূতাবাসের সত্যায়নে গতি বেড়েছে। কোম্পানি পরিদর্শন ও কাগজপত্র যাচাইবাছাই করে সত্যায়ন করা হচ্ছে, এমনটি জানা গেছে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে। দূতাবাসের পাইপ লাইনে জমা পড়া ৭০ হাজার আবেদনের বিপরিতে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজার আবেদন সত্যায়ন করেছে দূতাবাস।
এ দিকে দূতাবাসের সত্যায়নের বিষয়ে মিনিষ্টার শ্রম নাজমুস সাদাত সেলিম জানিয়েছেন, মান্যবর হাইকমিশনার মো: গোলাম সারোয়ারের সুদক্ষ পরিচালনায় প্রতিদিনের ন্যায় মালয়েশিয়ার অফিসিয়াল ছুটির দিনেও সূচারুরূপে দূতাবাসের কর্মকর্তারাগণ কাজ করে যাচ্ছেন। ৭০ হাজার আবেদনের বিপরিতে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজার আবেদন সত্যায়ন করা হয়েছে। তিনি আরোও জানান, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আরোপিত আইন অনুযায়ি বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনকৃত কোম্পানির কাগজপত্র সঠিক না থাকলে কোনো মতেই সত্যায়ন করা যাবেনা। অনেক কোম্পানি ভিজিটে গিয়ে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা নেই। নেই কাজের সু-ব্যবস্থাও। এসব কোম্পানির আবেদন সত্যায়নের ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হচ্ছে।
এদিকে দূতাবাস ৩৮ হাজার আবেদন সত্যায়ন করলেও বাংলাদেশ প্রান্তে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে মাত্র ১৮ শ ১০ জন স্মার্ট কাড (ছাড়পত্র) পেয়েছে। যা সত্যায়নের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। ফলে মালয়েশিয়ায় কর্মী আগমনে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। ধীরগতির ফলে শ্রম সংকটে থাকা মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তাদের মধ্যে টেনশন বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। কর্মী নিয়োগে গতি বৃদ্ধির জন্য সেদেশের বিরোধী দল ডি এ পির চেয়ারম্যান মানব সম্পদ মন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন।
উল্লেখ্য, অনিয়মের কারণে মাহাথির সরকার কর্তৃক স্থগিত করা কর্মী নিয়োগ ৮ আগস্ট ২০২২ থেকে শুরু করে। কর্মী পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সীর উপর চাকরি প্রত্যাশীদের ব্যাপক চাপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা। অনেকে পাসপোর্ট ও অর্থ দিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকে মালয়েশিয়ায় না যেতে পেরে এজেন্সিকে দোষারোপ করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে যে সিন্ডিকেটের কারণে মাহাথির সরকার কর্মী নিয়োগ স্থগিত করেছিল সেই একই রকম সিন্ডিকেট আবারও চালু হওয়ায় নিয়োগকর্তা, রিক্রুটিং এজেন্সি এবং অভিবাসন প্রত্যাশী কর্মীরা আশঙ্কা করছেন যে কখন হঠাৎ করে কর্মী নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। বিগত বিভিন্ন সময়ে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের ইতিহাস হতে দেখা গেছে যে, কর্মী নিয়োগ শুরু করলেও হঠাৎ করেই নিয়োগ বন্ধ করে। ফলে শ্রম মার্কেটে অর্থ বিনিয়োগ করা এজেন্সি চরম বিপদে পরে, যারা মালয়েশিয়া কর্মী হতে অর্থ দেয় তারাও বিপদে পরে। এসব বিবেচনায় নিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সি ন্যায় আচরণ করবে যেন কর্মী নিয়োগ বন্ধ না হয়, এমন প্রত্যাশা করছেন অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো: গোলাম সারোয়ার আশা করেছেন যে, আগামী তিন বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের ৫ লাখের বেশি নতুন কর্মীর কর্মসংস্থান হবে এবং এর মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে পাঠানো মোট রেমিট্যান্স তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ প্রান্ত থেকে কর্মী পাঠানোর গতি না বাড়ালে আবারও ভেস্তে যেতে পারে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ। কারণ হিসেবে অনেকেই বলছেন, মালয়েশিয়ার জাতীয় সাধারন নির্বাচন সন্নিকটে। নির্বাচনের পরে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে কর্মী নিয়োগ বন্ধ হবার সম্ভাবনা আছে বলে অনেকে শঙ্কিত।
এদিকে মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার চালুর আগে থেকেই ২৫ এজেন্সির বিররুদ্ধে সিন্ডিকেট তৈরির অভিযোগ উঠেছিল। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যানারে আন্দোলন করেন দেশের রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকেরা।
সবার জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্ত রাখার দাবিতে সিন্ডিকেটবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের ২৫ জনই এবার যুক্ত হচ্ছেন সিন্ডিকেটে। কর্মী পাঠানোর এজেন্সির তালিকায় নাম যুক্ত করতে বিভিন্ন এজেন্সি মালয়েশিয়া ও দেশের বিভিন্ন মহলে ইতিমধ্যে তদবির করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ এজেন্সির মালিকরা বলছেন, আন্দোলন করে বায়রার নির্বাচনে জয়ের পর সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে প্রতারণা করে নেতারা এখন সিন্ডিকেটে ঢুকছেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা) সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, নতুন তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
বায়রার একাধিক সদস্যে সুত্রে জানা গেছে নতুন ২৫ এজেন্সির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বায়রার সাবেক সভাপতি নূর আলী। ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বায়রার নির্বাচনে তাঁর সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছে।
২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যকার সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর মালয়েশিয়ার সরকারকে ১ হাজার ৫২০ এজেন্সির তালিকা দেওয়া হয় বলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করে। এজেন্সির তালিকা চূড়ান্ত করার দায়িত্ব মালয়েশিয়ার। শুরুতে ২৫টি এজেন্সিকে সুযোগ দেয় তারা। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা সমালোচনা হয়েছে। এখন আরও ২৫টি এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর সুযোগ দিচ্ছে। গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে মালয়েশিয়ান প্রতিনিধিদল ২৫ এজেন্সি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায়।
রিক্রুটিং এজেন্সি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর আগে ১০ এজেন্সির সিন্ডিকেটের অভিযোগে ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শ্রমিক শোষণসহ নানা অভিযোগে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন কোম্পানি মালয়েশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধের আগে ওই বছর পৌনে দুই লাখ কর্মী দেশটিতে কাজ নিয়ে যান। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বৈধভাবে মালয়েশিয়া গেছেন সাড়ে ১০ লাখ বাংলাদেশি কর্মী।
ফলে এসব কোম্পানি এখন আর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ দিতে চায় না। বরং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানদন্ড মেনে কর্মী নিতে চায় তারা। এ কারণে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাওয়া বাড়ছে না। ২৫টির জায়গায় ৫০টি এজেন্সি হলেও বাজার খুব বাড়বে বলে মনে হয় না ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ: গতি বাড়ছে দূতাবাসের সত্যায়নে

আপডেট সময় : ০৪:২২:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মি নিয়োগে, দূতাবাসের সত্যায়নে গতি বেড়েছে। কোম্পানি পরিদর্শন ও কাগজপত্র যাচাইবাছাই করে সত্যায়ন করা হচ্ছে, এমনটি জানা গেছে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে। দূতাবাসের পাইপ লাইনে জমা পড়া ৭০ হাজার আবেদনের বিপরিতে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজার আবেদন সত্যায়ন করেছে দূতাবাস।
এ দিকে দূতাবাসের সত্যায়নের বিষয়ে মিনিষ্টার শ্রম নাজমুস সাদাত সেলিম জানিয়েছেন, মান্যবর হাইকমিশনার মো: গোলাম সারোয়ারের সুদক্ষ পরিচালনায় প্রতিদিনের ন্যায় মালয়েশিয়ার অফিসিয়াল ছুটির দিনেও সূচারুরূপে দূতাবাসের কর্মকর্তারাগণ কাজ করে যাচ্ছেন। ৭০ হাজার আবেদনের বিপরিতে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজার আবেদন সত্যায়ন করা হয়েছে। তিনি আরোও জানান, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আরোপিত আইন অনুযায়ি বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনকৃত কোম্পানির কাগজপত্র সঠিক না থাকলে কোনো মতেই সত্যায়ন করা যাবেনা। অনেক কোম্পানি ভিজিটে গিয়ে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা নেই। নেই কাজের সু-ব্যবস্থাও। এসব কোম্পানির আবেদন সত্যায়নের ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হচ্ছে।
এদিকে দূতাবাস ৩৮ হাজার আবেদন সত্যায়ন করলেও বাংলাদেশ প্রান্তে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে মাত্র ১৮ শ ১০ জন স্মার্ট কাড (ছাড়পত্র) পেয়েছে। যা সত্যায়নের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। ফলে মালয়েশিয়ায় কর্মী আগমনে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। ধীরগতির ফলে শ্রম সংকটে থাকা মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তাদের মধ্যে টেনশন বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। কর্মী নিয়োগে গতি বৃদ্ধির জন্য সেদেশের বিরোধী দল ডি এ পির চেয়ারম্যান মানব সম্পদ মন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন।
উল্লেখ্য, অনিয়মের কারণে মাহাথির সরকার কর্তৃক স্থগিত করা কর্মী নিয়োগ ৮ আগস্ট ২০২২ থেকে শুরু করে। কর্মী পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সীর উপর চাকরি প্রত্যাশীদের ব্যাপক চাপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা। অনেকে পাসপোর্ট ও অর্থ দিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকে মালয়েশিয়ায় না যেতে পেরে এজেন্সিকে দোষারোপ করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে যে সিন্ডিকেটের কারণে মাহাথির সরকার কর্মী নিয়োগ স্থগিত করেছিল সেই একই রকম সিন্ডিকেট আবারও চালু হওয়ায় নিয়োগকর্তা, রিক্রুটিং এজেন্সি এবং অভিবাসন প্রত্যাশী কর্মীরা আশঙ্কা করছেন যে কখন হঠাৎ করে কর্মী নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। বিগত বিভিন্ন সময়ে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের ইতিহাস হতে দেখা গেছে যে, কর্মী নিয়োগ শুরু করলেও হঠাৎ করেই নিয়োগ বন্ধ করে। ফলে শ্রম মার্কেটে অর্থ বিনিয়োগ করা এজেন্সি চরম বিপদে পরে, যারা মালয়েশিয়া কর্মী হতে অর্থ দেয় তারাও বিপদে পরে। এসব বিবেচনায় নিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সি ন্যায় আচরণ করবে যেন কর্মী নিয়োগ বন্ধ না হয়, এমন প্রত্যাশা করছেন অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো: গোলাম সারোয়ার আশা করেছেন যে, আগামী তিন বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের ৫ লাখের বেশি নতুন কর্মীর কর্মসংস্থান হবে এবং এর মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে পাঠানো মোট রেমিট্যান্স তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ প্রান্ত থেকে কর্মী পাঠানোর গতি না বাড়ালে আবারও ভেস্তে যেতে পারে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ। কারণ হিসেবে অনেকেই বলছেন, মালয়েশিয়ার জাতীয় সাধারন নির্বাচন সন্নিকটে। নির্বাচনের পরে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে কর্মী নিয়োগ বন্ধ হবার সম্ভাবনা আছে বলে অনেকে শঙ্কিত।
এদিকে মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার চালুর আগে থেকেই ২৫ এজেন্সির বিররুদ্ধে সিন্ডিকেট তৈরির অভিযোগ উঠেছিল। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যানারে আন্দোলন করেন দেশের রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকেরা।
সবার জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্ত রাখার দাবিতে সিন্ডিকেটবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের ২৫ জনই এবার যুক্ত হচ্ছেন সিন্ডিকেটে। কর্মী পাঠানোর এজেন্সির তালিকায় নাম যুক্ত করতে বিভিন্ন এজেন্সি মালয়েশিয়া ও দেশের বিভিন্ন মহলে ইতিমধ্যে তদবির করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ এজেন্সির মালিকরা বলছেন, আন্দোলন করে বায়রার নির্বাচনে জয়ের পর সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে প্রতারণা করে নেতারা এখন সিন্ডিকেটে ঢুকছেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা) সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, নতুন তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
বায়রার একাধিক সদস্যে সুত্রে জানা গেছে নতুন ২৫ এজেন্সির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বায়রার সাবেক সভাপতি নূর আলী। ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বায়রার নির্বাচনে তাঁর সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছে।
২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যকার সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর মালয়েশিয়ার সরকারকে ১ হাজার ৫২০ এজেন্সির তালিকা দেওয়া হয় বলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করে। এজেন্সির তালিকা চূড়ান্ত করার দায়িত্ব মালয়েশিয়ার। শুরুতে ২৫টি এজেন্সিকে সুযোগ দেয় তারা। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা সমালোচনা হয়েছে। এখন আরও ২৫টি এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর সুযোগ দিচ্ছে। গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে মালয়েশিয়ান প্রতিনিধিদল ২৫ এজেন্সি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায়।
রিক্রুটিং এজেন্সি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর আগে ১০ এজেন্সির সিন্ডিকেটের অভিযোগে ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শ্রমিক শোষণসহ নানা অভিযোগে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন কোম্পানি মালয়েশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধের আগে ওই বছর পৌনে দুই লাখ কর্মী দেশটিতে কাজ নিয়ে যান। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বৈধভাবে মালয়েশিয়া গেছেন সাড়ে ১০ লাখ বাংলাদেশি কর্মী।
ফলে এসব কোম্পানি এখন আর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ দিতে চায় না। বরং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানদন্ড মেনে কর্মী নিতে চায় তারা। এ কারণে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাওয়া বাড়ছে না। ২৫টির জায়গায় ৫০টি এজেন্সি হলেও বাজার খুব বাড়বে বলে মনে হয় না ।