ঢাকা ১১:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ক্ষুব্ধ যাত্রীরা বলছেন: ‘এয়ার এ্যাষ্ট্রা এয়ারলাইনের সার্ভিস খুবই বাজে বিএমইটির প্রশাসন শাখায় গড়ে উঠেছে বদলী বানিজ্যর সিন্ডিকেট: ৯ কর্মকর্তা বদলী মুচলেকায় ছাড়া পেলেন ৩৭ লাখ টাকাসহ আটক প্রকৌশলী আমিরাতে ভিসা চালুর ব্যাপারে নির্দিষ্ট তারিখ বলা সম্ভব না: রাষ্ট্রদূত তারেক আহমদ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত নারীর প্রতি সহিংসতা : হেল্প অ্যাপে জানালেই সেটা এফআইআর হবে লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন ড. ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব সৌদির বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সাথে জিসিসি মহাসচিবের সাক্ষাত বিমানবন্দর রেলস্টেশনে নারী যাত্রীর কন্যা সন্তান প্রসব হজের নিবন্ধনের সময় বাড়লো ৭ দিন

ভালোবাসার টানে নোয়াখালীতে মিসরের তরুণী

  • আপডেট সময় : ০৫:৫৩:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অক্টোবর ২০২২
  • / 191
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভাষা-সংস্কৃতির ভেদাভেদ ভুলে গোলাম সারোয়ার বাবু (২৬) নামে এক যুবককে বিয়ে করে সুদুর মিসর থেকে বাংলাদেশে এসেছেন দালিয়া (২৬) নামে এক মিসরীয় তরুণী। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এই দম্পতি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দপুর গ্রামে বাড়িতে আসেন।

২০২০ সালে বাবু ও দালিয়া মিসরে বিয়ে করেন। বিয়ের পর প্রথম এই দম্পতি প্রথম বাংলাদেশে এসেছেন। এদিকে বিদেশি বধূকে দেখতে আশপাশের এলাকার মানুষ বাবুদের বাড়িতে ভিড় করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর যুবক গোলাম সারোয়ার বাবু ২০১২ সালে জীবিকার সন্ধানে মিসর যান। সেখানে একটি গার্মেন্টেসে চাকরি নেন। মিসরী তরুণী দালিয়াদের বাসার পাশেই থাকতেন বাবু। দালিয়ার ভাইয়ের সঙ্গে বাবুর বন্ধুত্ব ছিল। এ সুবাধে মাঝে মধ্যে দালিয়াদের বাসায় যাতায়াত ছিল। এক সময় বাবু ডালিয়াকে তার ভালো লাগার বিষয়টি জানান। এতে ডালিয়া রাজি হলে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালের দিকে দালিয়ার পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তার পরিবারের কেউই রাজি হননি। পরে দালিয়া অনেক কান্নাকাটি করে তার মা-বাবাকে রাজি করালে ২০২০ সালে ওই দেশের আইন কানুন মেনে মিসরে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। গত বছর তাদের একটি সন্তান হয়। জন্মের অল্প কিছুদিন পরে সন্তানটি মারা যায়। এরপর এই প্রথম দুজন একসঙ্গে বাংলাদেশে আসেন।

গোলাম সারোয়ার বাবু বলেন, শ্বশুরবাড়ি ঘুরে দেখতে দালিয়া বাংলাদেশে এসেছে। আমরা বর্তমানে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাচ্ছি। বিদেশি পুত্রবধূকে কাছে পেয়ে আমার বাবা-মা আনন্দিত।

কিছুটা বাংলা বলতে শিখেছেন দালিয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশি খাবার এবং পরিবেশ আমার ভালো লাগে। এটা আমার স্বামীর দেশ। এ দেশকে ভালোবাসি। তবে মাংসের চেয়ে আলু তার বেশি পছন্দ বলেও মন্তব্য করেন এই তরুণী।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জীবন বলেন, আমাদের নোয়াখালীতে বিদেশি তরুণী এসেছে। আমরা এতে অনেক খুশি। আমাদের নোয়াখালীর আতিথেয়তা দিয়ে তার মন আমরা জয় করব। গ্রামীণ পরিবেশ ঘুরে দেখাবো। আশা করি সে খুশি মনে বাংলাদেশ থেকে ফিরে যাবে এবং সুনাম করবে।

বাবুর বাবা গোলাম মাওলা মিয়া বলেন, পুত্রবধূ বাংলা ভাষা একটু-আধটু বলার চেষ্টা করে। এছাড়াও ইশারা-ইঙ্গিতে কথা বলছে। বিদেশি পুত্রবধূকে কাছে পেয়ে পরিবারের সবাই আনন্দিত।

নবীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন সোহেল বলেন, বিদেশি পুত্রবধূকে দেখার জন্য শত শত মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করছে। গ্রামের মানুষ এতে খুশি। দুজনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।

সেনবাগ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী বলেন, পুলিশ একবার তাদের বাড়িতে গিয়েছে। কোনো সমস্যা হলে আমাদের জানাতে বলেছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ভালোবাসার টানে নোয়াখালীতে মিসরের তরুণী

আপডেট সময় : ০৫:৫৩:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অক্টোবর ২০২২

ভাষা-সংস্কৃতির ভেদাভেদ ভুলে গোলাম সারোয়ার বাবু (২৬) নামে এক যুবককে বিয়ে করে সুদুর মিসর থেকে বাংলাদেশে এসেছেন দালিয়া (২৬) নামে এক মিসরীয় তরুণী। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এই দম্পতি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দপুর গ্রামে বাড়িতে আসেন।

২০২০ সালে বাবু ও দালিয়া মিসরে বিয়ে করেন। বিয়ের পর প্রথম এই দম্পতি প্রথম বাংলাদেশে এসেছেন। এদিকে বিদেশি বধূকে দেখতে আশপাশের এলাকার মানুষ বাবুদের বাড়িতে ভিড় করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর যুবক গোলাম সারোয়ার বাবু ২০১২ সালে জীবিকার সন্ধানে মিসর যান। সেখানে একটি গার্মেন্টেসে চাকরি নেন। মিসরী তরুণী দালিয়াদের বাসার পাশেই থাকতেন বাবু। দালিয়ার ভাইয়ের সঙ্গে বাবুর বন্ধুত্ব ছিল। এ সুবাধে মাঝে মধ্যে দালিয়াদের বাসায় যাতায়াত ছিল। এক সময় বাবু ডালিয়াকে তার ভালো লাগার বিষয়টি জানান। এতে ডালিয়া রাজি হলে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালের দিকে দালিয়ার পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তার পরিবারের কেউই রাজি হননি। পরে দালিয়া অনেক কান্নাকাটি করে তার মা-বাবাকে রাজি করালে ২০২০ সালে ওই দেশের আইন কানুন মেনে মিসরে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। গত বছর তাদের একটি সন্তান হয়। জন্মের অল্প কিছুদিন পরে সন্তানটি মারা যায়। এরপর এই প্রথম দুজন একসঙ্গে বাংলাদেশে আসেন।

গোলাম সারোয়ার বাবু বলেন, শ্বশুরবাড়ি ঘুরে দেখতে দালিয়া বাংলাদেশে এসেছে। আমরা বর্তমানে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাচ্ছি। বিদেশি পুত্রবধূকে কাছে পেয়ে আমার বাবা-মা আনন্দিত।

কিছুটা বাংলা বলতে শিখেছেন দালিয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশি খাবার এবং পরিবেশ আমার ভালো লাগে। এটা আমার স্বামীর দেশ। এ দেশকে ভালোবাসি। তবে মাংসের চেয়ে আলু তার বেশি পছন্দ বলেও মন্তব্য করেন এই তরুণী।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জীবন বলেন, আমাদের নোয়াখালীতে বিদেশি তরুণী এসেছে। আমরা এতে অনেক খুশি। আমাদের নোয়াখালীর আতিথেয়তা দিয়ে তার মন আমরা জয় করব। গ্রামীণ পরিবেশ ঘুরে দেখাবো। আশা করি সে খুশি মনে বাংলাদেশ থেকে ফিরে যাবে এবং সুনাম করবে।

বাবুর বাবা গোলাম মাওলা মিয়া বলেন, পুত্রবধূ বাংলা ভাষা একটু-আধটু বলার চেষ্টা করে। এছাড়াও ইশারা-ইঙ্গিতে কথা বলছে। বিদেশি পুত্রবধূকে কাছে পেয়ে পরিবারের সবাই আনন্দিত।

নবীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন সোহেল বলেন, বিদেশি পুত্রবধূকে দেখার জন্য শত শত মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করছে। গ্রামের মানুষ এতে খুশি। দুজনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।

সেনবাগ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী বলেন, পুলিশ একবার তাদের বাড়িতে গিয়েছে। কোনো সমস্যা হলে আমাদের জানাতে বলেছি।