ঢাকা ০১:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক ১১৪ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন

  • আপডেট সময় : ০৭:২২:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ ২০২২
  • / 395
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
মানবপাচারের শিকার লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে শত শত বাংলাশেী আটকে থেকে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। ত্রিপোলীর বাংলাদেশ দুতাবাসের চেষ্টায় লিবিয়ার একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক ১১৪ বাংলাদেশি অবশেষে দেশে ফিরে আসতে পেরেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বোরাক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তারা ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরন করেন। বিমানবন্দরে অবতরনের পর আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর পক্ষ থেকে তাদেরকে খাবার ও নগদ টাকা দেয়া হয়।
বিমানবন্দর আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৮টায় লিবিয়া থেকে ছেড়ে আসা বিশেষ ফ্লাইটটি শাহজালালে অবতরন করে। ওই ফ্লাইটে আসা ১১৪ যাত্রীর সবার কাছ থেকে লিবিয়ায় কিভাবে পাচার হয়েছিলেন তার তথ্য সংগ্রহ করেন বিভিন্ন সংস্থা। এরপর আইওএম এর পক্ষ থেকে খাবার ও নগদ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা করে প্রত্যেক যাত্রীকে প্রদান করা হয়।
এপিবিএন জিজ্ঞাসাবাদে যাত্রীদের কাছ থেকে জানতে পারেন, তারা ২০২১ সালের বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভিজিট ভিসায় দুবাই, ওমান ও মালয়েশিয়ায় যায়। সেখান থেকে দালালের মাধ্যমে তারা লিবিয়ায় যায়। সেখান থেকে দালালরা ত্রিপোলিতে নিয়ে গেমঘরে রাখে। সেখান থেকে বিভিন্ন সময়ে লিবিয়ার পুলিশ ও সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেশা ফেরা যাত্রীরা জানিয়েছে। এরআগে সাগরপথে ইউরোপের দেশ ইতালীতে পাঠানোর জন্য দালালরা তাদের কাছ থেকে ১১-১২- থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করে নেয়।
লিবিয়ায় যাওয়ার পর আটক এসব ব্যক্তিদের কেউ ৬ মাস আবার কেউ কেউ ৯ মাস পর্যন্ত জেল খেটেছে। পরবর্তীতে জাতিসংঘের ঞযব টহরঃবফ ঘধঃরড়হং গরমৎধঃরড়হ অমবহপু এর আউট পাস দিয়ে তারা দেশে ফিরে আসেন।
উল্লেখ্য গত ১৪ এবং ১৫ ফেব্রুয়ারী লিবিয়ার ত্রিপোলীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামিম উজ জামান কুটনৈতিক প্রচেষ্টার পর লিবিয়ার ৫৫ নম্বর ডিটেনশন ক্যাম্প পরিদর্শন করার সুযোগ পান। সেখানে তিনি আটক বাংলাদেশীদের সাথে সাক্ষাত করে তাদের স্বাস্থ্যর খোজ নেন। দুতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের সবার রেজিষ্টেশন সম্পন্ন করা হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারী আইওএম লিবিয়ার উপ-পরিচালক ক্লাউডিয়া নাতালির সাথে আটকদের দেশে প্রত্যাবাসন ও সার্বিক কল্যান নিশ্চিতের লক্ষ্য রাষ্ট্রদূত বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ক্যাম্পে আটকদের মধ্যে থেকে ১১৪ জন দেশে ফেরেন।
দেশে ফেরাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া শুরু করছেন বলে বিমানবন্দর সুত্রে জানা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক ১১৪ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন

আপডেট সময় : ০৭:২২:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
মানবপাচারের শিকার লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে শত শত বাংলাশেী আটকে থেকে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। ত্রিপোলীর বাংলাদেশ দুতাবাসের চেষ্টায় লিবিয়ার একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক ১১৪ বাংলাদেশি অবশেষে দেশে ফিরে আসতে পেরেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বোরাক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তারা ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরন করেন। বিমানবন্দরে অবতরনের পর আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর পক্ষ থেকে তাদেরকে খাবার ও নগদ টাকা দেয়া হয়।
বিমানবন্দর আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৮টায় লিবিয়া থেকে ছেড়ে আসা বিশেষ ফ্লাইটটি শাহজালালে অবতরন করে। ওই ফ্লাইটে আসা ১১৪ যাত্রীর সবার কাছ থেকে লিবিয়ায় কিভাবে পাচার হয়েছিলেন তার তথ্য সংগ্রহ করেন বিভিন্ন সংস্থা। এরপর আইওএম এর পক্ষ থেকে খাবার ও নগদ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা করে প্রত্যেক যাত্রীকে প্রদান করা হয়।
এপিবিএন জিজ্ঞাসাবাদে যাত্রীদের কাছ থেকে জানতে পারেন, তারা ২০২১ সালের বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভিজিট ভিসায় দুবাই, ওমান ও মালয়েশিয়ায় যায়। সেখান থেকে দালালের মাধ্যমে তারা লিবিয়ায় যায়। সেখান থেকে দালালরা ত্রিপোলিতে নিয়ে গেমঘরে রাখে। সেখান থেকে বিভিন্ন সময়ে লিবিয়ার পুলিশ ও সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেশা ফেরা যাত্রীরা জানিয়েছে। এরআগে সাগরপথে ইউরোপের দেশ ইতালীতে পাঠানোর জন্য দালালরা তাদের কাছ থেকে ১১-১২- থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করে নেয়।
লিবিয়ায় যাওয়ার পর আটক এসব ব্যক্তিদের কেউ ৬ মাস আবার কেউ কেউ ৯ মাস পর্যন্ত জেল খেটেছে। পরবর্তীতে জাতিসংঘের ঞযব টহরঃবফ ঘধঃরড়হং গরমৎধঃরড়হ অমবহপু এর আউট পাস দিয়ে তারা দেশে ফিরে আসেন।
উল্লেখ্য গত ১৪ এবং ১৫ ফেব্রুয়ারী লিবিয়ার ত্রিপোলীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামিম উজ জামান কুটনৈতিক প্রচেষ্টার পর লিবিয়ার ৫৫ নম্বর ডিটেনশন ক্যাম্প পরিদর্শন করার সুযোগ পান। সেখানে তিনি আটক বাংলাদেশীদের সাথে সাক্ষাত করে তাদের স্বাস্থ্যর খোজ নেন। দুতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের সবার রেজিষ্টেশন সম্পন্ন করা হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারী আইওএম লিবিয়ার উপ-পরিচালক ক্লাউডিয়া নাতালির সাথে আটকদের দেশে প্রত্যাবাসন ও সার্বিক কল্যান নিশ্চিতের লক্ষ্য রাষ্ট্রদূত বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ক্যাম্পে আটকদের মধ্যে থেকে ১১৪ জন দেশে ফেরেন।
দেশে ফেরাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া শুরু করছেন বলে বিমানবন্দর সুত্রে জানা গেছে।