ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারঃ লাইসেন্স নিয়ে বৈষম্য হবে না

  • আপডেট সময় : ০৪:৩১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 889
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কর্মী প্রেরনে সকল লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিক্রুটিং এজেন্সির অংশগ্রহনের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন সফররত মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন ইন্ড্রাস্টি এন্ড কমমোডিটিস মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী দাতুক হাজাহ যুরাইদা বিনতি কামারুদ্দিন। তিনি বলেন, সরকার অনুমোদিত লাইসেন্স নিয়ে কোন ধরনের বৈষম্যমূলক নীতিকে তিনি সমর্থন করেন না। এছাড়া অভিবাসন নিয়ে যেকোন ধরনের সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। গতকাল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রূটিং এজেন্সিস’র (বায়রা) সাবেক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে মালয়েশিযার মন্ত্রী সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে তার এই অবস্থান তুলে ধরেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বায়রার উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি মোহা. নূর আলী, সাবেক মহাসচিব শামিম আহমেদ চৌধুরি নোমান, সাবেক অর্থ সচিব ফখরুল ইসলাম ও সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান। বৈঠকে বায়রা নেতৃবৃন্দ মালয়েশিয়ার মন্ত্রীকে বলেন, সব বৈধ লাইসেন্সকে কাজের সমান সুযোগ দিতে হবে। সব লাইসেন্স কাজের সুযোগ পেলে অভিবাসন নিয়ে দুর্নীতির সুযোগ থাকবেন না। গেটওয়ে বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অধিক কর্মী অনেক কম খরচে মালয়েশিয়া যেতে পারবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৯শে ডিসেম্বর দুদেশের মধ্যে সাক্ষরিত সমঝতা স্মারকে উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রী সারাভানান মুরুগান গত ১৪ই জানুয়ারি প্রবাসি কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদকে ২৫ রিক্রূটিং এজেন্সির অনুমোদনের জন্য চিঠি দেন। যা দুইদেশেই ব্যাপক সমালোচিত হয়। মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রীর ২৫ এজেন্সির সিন্ডিকেটের প্রস্তাব বাংলাদেশের আইন বহির্ভুত হওয়ায় সে বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। চিঠির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ও নবায়নকৃত ১৫৩০ লাইসেন্সের তালিকা পাঠানো হয়েছে। বায়রা নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৭-২০১৮ সালে সিন্ডিকেটের দুর্নীতির কারনে কোর্ট কর্তৃক সকল এজেন্সির কাজ করার ব্যাপারে রেফারেন্স রয়েছে। সেক্ষেত্রে আবারো যদি একই মনোপলি ফর্মূলায় কর্মী প্রেরনের ব্যবস্থা হয় তবে যেকোন সময় প্রতিযোগিতা আইনে মামলা হতে পারে। ফলে কর্মী প্রেরন আবারো অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনিশ্চতায় পড়বে। সমঝোতা স্মারকে ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির বিষয়ে কোন কথা উল্লেখ নাই। লাইসেন্স নিয়ে বৈষম্যে করা যাবে না। বাংলাদেশের সব লাইসেন্সের স্ট্যাটাস একই। বায়রা নেতারা আরো বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও বায়রা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রীর ২৫ এজেন্সির সিন্ডিকেটের প্রস্তাব নীতিগত ভাবে গ্রহনযোগ্য নয় বিধায় বিষয়টি ঝুলে আছে। শ্রমবাজার নিয়ে যেকোন প্রকার সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের সাথে একমত পোষন করেন বায়রা নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বাংলদেশ সরকার অনুমোদিত ও নবায়নকৃত যে ১৫৩০ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা পাঠানো হয়েছে তা মালয়েশিয়া সরকার গ্রহন করলেই যেকোন সময় কর্মী প্রেরন সম্ভব বলে জানান। বৈঠকে মালয়েশিয় মন্ত্রী এ ব্যাপারে তার অবস্থান তুলে ধরে বলেন, সরকার অনুমোদিত এজেন্সিদের নিয়ে কোন ধরনের বৈষম্যেমূলক নীতিকে তিনি সমর্থন করেন না। এছাড়া রিক্রূটিং এজেন্সি নিয়ে যেকোন ধরনের বৈষম্যেমূলক নীতির বিপক্ষে তার অবস্থান। তিনি বলেন, দুই দেশকে অবশ্যই সাক্ষরিত সমঝেতা স্মারক অনুযায়ী কর্মী প্রেরন করতে হবে। সমঝোতা স্মারক বহির্ভুত কোন প্রক্রিয়াই অনুসরণ করা যাবেনা। বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মীদের দীর্ঘ কয়েক যুগের অবদানের কথা স্বীকার করে মন্ত্রী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এবং বাংলাদেশি কর্মি নির্ভর এই সেক্টরের জন্য বাংলাদেশি কর্মিদের প্রতি তার সরকারের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। তিনি বায়রার নেতৃবৃন্দকে বলেন, প্লান্টেশন সেক্টরে শুন্য খরচে (জিরো কস্টে) কর্মী নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। জিরো কস্ট ফর্মূলায় দেশে ও বিদেশের মাটিতে কর্মীর অভিবাসনের সকল খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। নিয়োগকর্তা সংশ্লিষ্ট রিক্রূটিং এজেন্সিকে সার্ভিস চার্জ ও প্রসেসিং ফি প্রদান করবে। মালয়েশিয়ার শ্রম আইন অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত ১২০০ রিঙ্গিট বেতন পাবে ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী কর্মীরা হোস্টেল, চিকিৎসা সেবাসহ অন্যন্য প্রাপ্য সুবিধাদি ভোগ করবে। বৈঠকে বায়রার নেতৃবৃন্দ মালয়েশিয়া সরকারের শুন্য খরচে অভিবাসনের বিষয়টিকে স্বাগত জানান। কর্মীর স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারকে অভিবাসন সংক্রান্ত সকল বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দেন তারা।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারঃ লাইসেন্স নিয়ে বৈষম্য হবে না

আপডেট সময় : ০৪:৩১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কর্মী প্রেরনে সকল লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিক্রুটিং এজেন্সির অংশগ্রহনের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন সফররত মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন ইন্ড্রাস্টি এন্ড কমমোডিটিস মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী দাতুক হাজাহ যুরাইদা বিনতি কামারুদ্দিন। তিনি বলেন, সরকার অনুমোদিত লাইসেন্স নিয়ে কোন ধরনের বৈষম্যমূলক নীতিকে তিনি সমর্থন করেন না। এছাড়া অভিবাসন নিয়ে যেকোন ধরনের সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। গতকাল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রূটিং এজেন্সিস’র (বায়রা) সাবেক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে মালয়েশিযার মন্ত্রী সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে তার এই অবস্থান তুলে ধরেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বায়রার উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি মোহা. নূর আলী, সাবেক মহাসচিব শামিম আহমেদ চৌধুরি নোমান, সাবেক অর্থ সচিব ফখরুল ইসলাম ও সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান। বৈঠকে বায়রা নেতৃবৃন্দ মালয়েশিয়ার মন্ত্রীকে বলেন, সব বৈধ লাইসেন্সকে কাজের সমান সুযোগ দিতে হবে। সব লাইসেন্স কাজের সুযোগ পেলে অভিবাসন নিয়ে দুর্নীতির সুযোগ থাকবেন না। গেটওয়ে বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অধিক কর্মী অনেক কম খরচে মালয়েশিয়া যেতে পারবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৯শে ডিসেম্বর দুদেশের মধ্যে সাক্ষরিত সমঝতা স্মারকে উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রী সারাভানান মুরুগান গত ১৪ই জানুয়ারি প্রবাসি কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদকে ২৫ রিক্রূটিং এজেন্সির অনুমোদনের জন্য চিঠি দেন। যা দুইদেশেই ব্যাপক সমালোচিত হয়। মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রীর ২৫ এজেন্সির সিন্ডিকেটের প্রস্তাব বাংলাদেশের আইন বহির্ভুত হওয়ায় সে বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। চিঠির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ও নবায়নকৃত ১৫৩০ লাইসেন্সের তালিকা পাঠানো হয়েছে। বায়রা নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৭-২০১৮ সালে সিন্ডিকেটের দুর্নীতির কারনে কোর্ট কর্তৃক সকল এজেন্সির কাজ করার ব্যাপারে রেফারেন্স রয়েছে। সেক্ষেত্রে আবারো যদি একই মনোপলি ফর্মূলায় কর্মী প্রেরনের ব্যবস্থা হয় তবে যেকোন সময় প্রতিযোগিতা আইনে মামলা হতে পারে। ফলে কর্মী প্রেরন আবারো অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনিশ্চতায় পড়বে। সমঝোতা স্মারকে ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির বিষয়ে কোন কথা উল্লেখ নাই। লাইসেন্স নিয়ে বৈষম্যে করা যাবে না। বাংলাদেশের সব লাইসেন্সের স্ট্যাটাস একই। বায়রা নেতারা আরো বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও বায়রা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রীর ২৫ এজেন্সির সিন্ডিকেটের প্রস্তাব নীতিগত ভাবে গ্রহনযোগ্য নয় বিধায় বিষয়টি ঝুলে আছে। শ্রমবাজার নিয়ে যেকোন প্রকার সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের সাথে একমত পোষন করেন বায়রা নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বাংলদেশ সরকার অনুমোদিত ও নবায়নকৃত যে ১৫৩০ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা পাঠানো হয়েছে তা মালয়েশিয়া সরকার গ্রহন করলেই যেকোন সময় কর্মী প্রেরন সম্ভব বলে জানান। বৈঠকে মালয়েশিয় মন্ত্রী এ ব্যাপারে তার অবস্থান তুলে ধরে বলেন, সরকার অনুমোদিত এজেন্সিদের নিয়ে কোন ধরনের বৈষম্যেমূলক নীতিকে তিনি সমর্থন করেন না। এছাড়া রিক্রূটিং এজেন্সি নিয়ে যেকোন ধরনের বৈষম্যেমূলক নীতির বিপক্ষে তার অবস্থান। তিনি বলেন, দুই দেশকে অবশ্যই সাক্ষরিত সমঝেতা স্মারক অনুযায়ী কর্মী প্রেরন করতে হবে। সমঝোতা স্মারক বহির্ভুত কোন প্রক্রিয়াই অনুসরণ করা যাবেনা। বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মীদের দীর্ঘ কয়েক যুগের অবদানের কথা স্বীকার করে মন্ত্রী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এবং বাংলাদেশি কর্মি নির্ভর এই সেক্টরের জন্য বাংলাদেশি কর্মিদের প্রতি তার সরকারের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। তিনি বায়রার নেতৃবৃন্দকে বলেন, প্লান্টেশন সেক্টরে শুন্য খরচে (জিরো কস্টে) কর্মী নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। জিরো কস্ট ফর্মূলায় দেশে ও বিদেশের মাটিতে কর্মীর অভিবাসনের সকল খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। নিয়োগকর্তা সংশ্লিষ্ট রিক্রূটিং এজেন্সিকে সার্ভিস চার্জ ও প্রসেসিং ফি প্রদান করবে। মালয়েশিয়ার শ্রম আইন অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত ১২০০ রিঙ্গিট বেতন পাবে ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী কর্মীরা হোস্টেল, চিকিৎসা সেবাসহ অন্যন্য প্রাপ্য সুবিধাদি ভোগ করবে। বৈঠকে বায়রার নেতৃবৃন্দ মালয়েশিয়া সরকারের শুন্য খরচে অভিবাসনের বিষয়টিকে স্বাগত জানান। কর্মীর স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারকে অভিবাসন সংক্রান্ত সকল বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দেন তারা।