মধ্যপ্রাচ্যের রেমিট্যান্স বাড়াতে প্রয়োজন আরবি ভাষা শিক্ষা
- আপডেট সময় : ১০:২৩:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪
- / 44
- নিজস্ব প্রতিবেদক
রেমিট্যান্স বাড়াতে আরবি ভাষা শিক্ষা নেওয়ার ওপর জনমত সৃষ্টি করা দরকার। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের দেশের শ্রমিকরা ভাষা না জানার কারণে অনেক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। আগামীতে যাতে আমাদের জনশক্তির অপচয় না হয় সেদিকে সবার খেয়াল রাখা দরকার বলে জানিয়েছেন সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) চেয়ারম্যান ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ। শনিবার (২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ কুরআন প্রচার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘মধ্যপ্রাচ্য কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো অপরিহার্য’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, রেমিট্যান্স বাড়াতে আরবি ভাষা শিক্ষা নেওয়ার ওপরে জনমত সৃষ্টি করা দরকার। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের দেশের শ্রমিকরা ভাষা না জানায় অনেক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন। আগামীতে যাতে আমাদের জনশক্তির অপচয় না হয় সেদিকে সবার খেয়াল রাখা দরকার। মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া শ্রমিকদের কাইফা হালুকা, আনা বিখায়ের শুধু এটুকু আরবি সেন্টেন্স জানলেই হবে না, একজন শ্রমিক যাতে আরবি বুঝতে ও বোঝাতে পারে পাশাপাশি লিখতে পারে সেটা জানা খুবই দরকার। এজন্য দেশ থেকেই আরবি ভাষা শিখিয়ে পড়িয়ে পাঠাতে হবে। যদি তা করা না হয় তাহলে মানবিক মর্যাদা, সামাজিক মর্যাদা এবং আর্থিক মর্যাদায়ও আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে থাকবো। তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অন্তত লাখ কোটি সার্টিফিকেটধারী লোক সৃষ্টি করেছে। সেই সার্টিফিকেটধারী লোকেরা বিদেশ হয়ত গিয়েছে বা যায়নি। যদি না যায়, তাহলে কেন যায়নি। অর্থাৎ আমাদের এখানে বড় একটা শুভঙ্করের ফাঁকি বা অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা কাজ করেছে বলেই আজকে রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে এই দুর্গতি। অথচ এরাই আমাদের মানব সম্পদ। সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কর্মীরা মধ্যপ্রাচ্যে অধস্তনের অধস্তন হিসেবে কাজ করে। সবচেয়ে প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে পাকিস্তানি ও শ্রীলঙ্কান বা অন্যরা হচ্ছে বাংলাদেশিদের বস। এটার অন্যতম কারণ ভাষা জানা। তারা ভাষা জানার কারণে মালিকদের কাছাকাছি যেতে পারলেও আমরা যেতে পারি না, তাদের বোঝাতেও পারি না। যেকারণে চাইলেও মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের শ্রমিকরা বড় কোনো পদে যেতে পারেন না। তিনি আরও বলেন, জমিজমা বিক্রি করে শ্রমিকরা মধ্যপ্রাচ্যে গিয়েই টেনশনে পড়েন কীভাবে সেই টাকা তুলবেন। বিদেশে গিয়ে শুধু আরবি ভাষা না জানার কারণে তারা নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। এরপর বিদেশে নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে যখন দেশে ফিরে আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধা তখন বিমানবন্দরে তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয় মনে হয়, একজন আসামি এসেছে। আমাদের এই মানবিক মূল্যবোধ, সামজিক মূল্যবোধগুলো পরিবর্তন আনা দরকার। ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত তিনটি ভিতের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেগুলো হলো- রেমিট্যান্স, গার্মেন্টস ও গ্রামীণ উন্নয়ন। তিনি বলেন, প্রবাসীদের বলা হয় রেমিট্যান্স যোদ্ধা। সত্যিকার অর্থে তারাই আসল যোদ্ধা। আমরা জাতিগতভাবে স্বাধীনতা লাভ করেছি। তবে অর্থনৈতিকভাবে এখনো স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি। এজন্য বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্যদের কাছে কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে।