খুলছে বিমানযাত্রার নতুন দিগন্ত

  • আপডেট সময় : ০৯:৫১:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩
  • / 76
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পের এক অনন্য স্থাপনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের শুভ উদ্বোধন আজ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় বর্তমান সরকারের আরেক উন্নয়ন মাইলফলক থার্ড টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করবেন। আর এ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে খুলে যাবে বিমানযাত্রার এক নতুন দিগন্ত। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। টার্মিনালের ভিতরেই তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। আজকের এ অনুষ্ঠানে ১ হাজার ২০০ অতিথি উপস্থিত থাকছেন। উদ্বোধনের অংশ হিসেবে গত তিন দিনের সর্বশেষ মহড়ায় এ টার্মিনাল থেকে তিনটি ফ্লাইট পরীক্ষামূলক চালু করা হয়েছে। বিমানের ফ্লাইট দিয়েই মহড়া হয়। আজও বিমানের একটি ফ্লাইট থার্ড টার্মিনাল হয়ে আকাশে উড়াল দেবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে মনোমুগ্ধকর নির্মাণশৈলীতে আকাশপথের যাত্রী ও বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইনসকে তাক লাগাতে চায় বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তৃতীয় টার্মিনালের বে ও বোর্ডিং ব্রিজ পরীক্ষামূলক ব্যবহার করেছি। তবে ইমিগ্রেশনসহ যাত্রীদের ফ্লাইটে ওঠার আগে সব ধরনের কার্যক্রম টার্মিনাল-২তেই সম্পন্ন করা হয়। পরে যাত্রীদের নিয়ে ফ্লাইটটি নির্ধারিত রানওয়ে দিয়ে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। বৃহস্পতিবার কাঠমান্ডু ফ্লাইটটিও একই প্রক্রিয়ায় সফলভাবে উড্ডয়ন করে।’ এদিকে বিমানের ফ্লাইটই সবার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার করবে থার্ড টার্মিনাল। এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. শফিউল আজিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এ মহড়ায় নতুন ইউনিফর্মে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং টিম বিজি ৩৭১ বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সুসম্পন্ন করে। ফ্লাইটটি সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যায়। বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের অভিজ্ঞতা ৫০ বছরের বেশি। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সব ধরনের লাইসেন্সও বিমানের রয়েছে। তৃতীয় টার্মিনালের জন্য বিমানের টিম পুরোপুরি প্রস্তুত।

বাংলাদেশ বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে টার্মিনালের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় শুধু টার্মিনাল ভবন নয়, আমদানি ও রপ্তানি কার্গো ভবনও নির্মাণ করা হয়েছে। করোনার সময়ও টার্মিনালের নির্মাণকাজ থামেনি। টার্মিনালের পাশাপাশি আমদানি ও রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী মার্চে বা এপ্রিলের দিকে কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করা যাবে। 

বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল মালেক জানান, এটি সত্যিকার অর্থেই স্বপ্নের এয়ারপোর্ট। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় বর্তমান সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে শেষ করে এনেছে থার্ড টার্মিনাল। এটি মূলত তিন তলাবিশিষ্ট। এ টার্মিনালটিকে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচইন এয়ারপোর্টের চেয়ে অত্যাধুনিক দাবি করতে পারি আমরা। এটা শুধু দেখতেই যে নয়নাভিরাম, দৃষ্টিনন্দন সেটা নয়। প্রযুক্তির দিক থেকেও সবার সেরা। থার্ড টার্মিনালে ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বের নির্ভরযোগ্য সব প্রডাক্ট। মানেও সেরার দাবিদার আমরা। এ একটা এয়ারপোর্টই দেশের বিশেষ পরিচিতি এনে দেবে। এটা আমাদের অহংকার, এটা আমাদের সক্ষমতার অন্যতম মানদন্ড। এমন একটি স্থাপত্যশৈলী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে সবার নজর কাড়ার জন্য প্রস্তুত। জানা গেছে, এ টার্মিনালের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। যাত্রীধারণ সক্ষমতা হবে বছরে ১৬ মিলিয়ন। তৃতীয় টার্মিনালের কার পার্কিংয়ে ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি রাখা যাবে। উড়োজাহাজ পার্কিং বে থাকবে ৩৭টি। আগমনি যাত্রীদের জন্য লাগেজ বেল্ট থাকবে ১৬টি। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য ১ হাজার ৩০০ বর্গমিটার আয়তনের একটি কাস্টমস হল থাকবে। সেখানে ছয়টি চ্যানেল থাকবে। চেক ইন কাউন্টার থাকবে ১১৫টি, এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয় ১৫টি। ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকছে ১২৮টি। এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয় ১৫টি। বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৬৬টি। আগমনি ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৫৯টি। ভিভিআইপি তিনটি। বোর্ডিং ব্রিজ থাকবে প্রথম পর্যায়ে ১২টি। পরে আরেকটি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় আরও ১৪টি বোর্ডিং ব্রিজ যুক্ত করা হবে। বর্তমান টার্মিনাল দুটির সঙ্গে তৃতীয় টার্মিনালের কোনো সংযোগ থাকবে না। তবে পরে প্রকল্পে করিডর নির্মাণ করা হবে। সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার এ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাইপে ১০১, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচইন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আবুধাবির ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি ও সম্ভাবনা উন্মোচনের মাধ্যমে নির্মাণে আধুনিকতা নিয়ে এসেছে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন গ্রুপ। এ ছাড়া টার্মিনালের ভিতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-৩, চীনের গুয়ানজুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নকশা তৈরি করেন। ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণকাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এ থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

খুলছে বিমানযাত্রার নতুন দিগন্ত

আপডেট সময় : ০৯:৫১:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩
বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পের এক অনন্য স্থাপনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের শুভ উদ্বোধন আজ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় বর্তমান সরকারের আরেক উন্নয়ন মাইলফলক থার্ড টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করবেন। আর এ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে খুলে যাবে বিমানযাত্রার এক নতুন দিগন্ত। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। টার্মিনালের ভিতরেই তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। আজকের এ অনুষ্ঠানে ১ হাজার ২০০ অতিথি উপস্থিত থাকছেন। উদ্বোধনের অংশ হিসেবে গত তিন দিনের সর্বশেষ মহড়ায় এ টার্মিনাল থেকে তিনটি ফ্লাইট পরীক্ষামূলক চালু করা হয়েছে। বিমানের ফ্লাইট দিয়েই মহড়া হয়। আজও বিমানের একটি ফ্লাইট থার্ড টার্মিনাল হয়ে আকাশে উড়াল দেবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে মনোমুগ্ধকর নির্মাণশৈলীতে আকাশপথের যাত্রী ও বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইনসকে তাক লাগাতে চায় বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তৃতীয় টার্মিনালের বে ও বোর্ডিং ব্রিজ পরীক্ষামূলক ব্যবহার করেছি। তবে ইমিগ্রেশনসহ যাত্রীদের ফ্লাইটে ওঠার আগে সব ধরনের কার্যক্রম টার্মিনাল-২তেই সম্পন্ন করা হয়। পরে যাত্রীদের নিয়ে ফ্লাইটটি নির্ধারিত রানওয়ে দিয়ে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। বৃহস্পতিবার কাঠমান্ডু ফ্লাইটটিও একই প্রক্রিয়ায় সফলভাবে উড্ডয়ন করে।’ এদিকে বিমানের ফ্লাইটই সবার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার করবে থার্ড টার্মিনাল। এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. শফিউল আজিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এ মহড়ায় নতুন ইউনিফর্মে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং টিম বিজি ৩৭১ বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সুসম্পন্ন করে। ফ্লাইটটি সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যায়। বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের অভিজ্ঞতা ৫০ বছরের বেশি। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সব ধরনের লাইসেন্সও বিমানের রয়েছে। তৃতীয় টার্মিনালের জন্য বিমানের টিম পুরোপুরি প্রস্তুত।

বাংলাদেশ বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে টার্মিনালের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় শুধু টার্মিনাল ভবন নয়, আমদানি ও রপ্তানি কার্গো ভবনও নির্মাণ করা হয়েছে। করোনার সময়ও টার্মিনালের নির্মাণকাজ থামেনি। টার্মিনালের পাশাপাশি আমদানি ও রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী মার্চে বা এপ্রিলের দিকে কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করা যাবে। 

বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল মালেক জানান, এটি সত্যিকার অর্থেই স্বপ্নের এয়ারপোর্ট। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় বর্তমান সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে শেষ করে এনেছে থার্ড টার্মিনাল। এটি মূলত তিন তলাবিশিষ্ট। এ টার্মিনালটিকে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচইন এয়ারপোর্টের চেয়ে অত্যাধুনিক দাবি করতে পারি আমরা। এটা শুধু দেখতেই যে নয়নাভিরাম, দৃষ্টিনন্দন সেটা নয়। প্রযুক্তির দিক থেকেও সবার সেরা। থার্ড টার্মিনালে ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বের নির্ভরযোগ্য সব প্রডাক্ট। মানেও সেরার দাবিদার আমরা। এ একটা এয়ারপোর্টই দেশের বিশেষ পরিচিতি এনে দেবে। এটা আমাদের অহংকার, এটা আমাদের সক্ষমতার অন্যতম মানদন্ড। এমন একটি স্থাপত্যশৈলী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে সবার নজর কাড়ার জন্য প্রস্তুত। জানা গেছে, এ টার্মিনালের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। যাত্রীধারণ সক্ষমতা হবে বছরে ১৬ মিলিয়ন। তৃতীয় টার্মিনালের কার পার্কিংয়ে ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি রাখা যাবে। উড়োজাহাজ পার্কিং বে থাকবে ৩৭টি। আগমনি যাত্রীদের জন্য লাগেজ বেল্ট থাকবে ১৬টি। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য ১ হাজার ৩০০ বর্গমিটার আয়তনের একটি কাস্টমস হল থাকবে। সেখানে ছয়টি চ্যানেল থাকবে। চেক ইন কাউন্টার থাকবে ১১৫টি, এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয় ১৫টি। ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকছে ১২৮টি। এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয় ১৫টি। বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৬৬টি। আগমনি ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৫৯টি। ভিভিআইপি তিনটি। বোর্ডিং ব্রিজ থাকবে প্রথম পর্যায়ে ১২টি। পরে আরেকটি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় আরও ১৪টি বোর্ডিং ব্রিজ যুক্ত করা হবে। বর্তমান টার্মিনাল দুটির সঙ্গে তৃতীয় টার্মিনালের কোনো সংযোগ থাকবে না। তবে পরে প্রকল্পে করিডর নির্মাণ করা হবে। সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার এ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাইপে ১০১, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচইন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আবুধাবির ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি ও সম্ভাবনা উন্মোচনের মাধ্যমে নির্মাণে আধুনিকতা নিয়ে এসেছে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন গ্রুপ। এ ছাড়া টার্মিনালের ভিতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-৩, চীনের গুয়ানজুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নকশা তৈরি করেন। ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণকাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এ থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়।