সংবাদ শিরোনাম :
আশা জাগানিয়া নতুন রুটের সন্ধানে…
- আপডেট সময় : ০৯:১৮:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩
- / 202
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন একটি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সকল সূচকে প্রভাব বিস্তার করে। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, পদ্মা সেতু, মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেস ওয়ে, কর্ণফুলি টানেলসহ নানাবিধ উন্নয়ন বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থাকে সূদৃঢ় করেছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মান বাংলাদেশের এভিয়েশনকে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে উন্নিত করার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ের পরিধি বিস্তার করে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে বিমান অবতরণের সুযোগ করে দিচ্ছে। যশোর, সৈয়দপুর বিমানবন্দরের টার্মিনালকে আন্তর্জাতিক মানদন্ডের রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ও রানওয়ের সম্প্রসারণ দেশের এভিয়েশনের অগ্রযাত্রাই নির্দেশ করছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাথে কক্সবাজার ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নিত করার চেষ্টায় লিপ্ত বাংলাদেশ সরকার। সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নিত করলে ভারতের সাতকন্যা খ্যাত রাজ্যগুলো, নেপাল ও ভুটানের সাথে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো বেশী জোরদার হবে। বর্তমানে আটটি বিমানবন্দর দেশের অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের আকাশ পথকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে। যা মানচিত্রের অর্ধেক জনগোষ্টিকে সেবা দিয়ে থাকে। বর্তমানে চালু বিমানবন্দরগুলো হচ্ছে- ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর. চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও বরিশাল বিমানবন্দর। পূর্বে পরিচালিত ঠাকুরগাঁও, কুমিল্লা, ইশ্বরদী, লালমনিরহাট এর সাথে শমশেরনগর, খুলনার খানজাহান আলী, বগুড়া বিমানবন্দরকে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনা শুরু করার ইচ্ছে পোষণ করেছে সরকার। যার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ২০৩০ সাল নাগাদ। নতুন নতুন রুট দেশের আকাশ পথে সংযোগ স্থাপন করলে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক চিত্র পরিবর্তন হয়ে যাবে। কোভিড কালীন সময়ে দেখা গেছে আকাশ পথের লকডাউনের কারনে বিশ্বের সকল শিল্প স্থবির হয়ে পড়ে। একটি বিমানবন্দর ঐ এলাকার সামাজিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এলাকাভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। কাজের ক্ষেত্র তৈরী হয়। বেকারত্ব দূরীকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ তিনটি বেসরকারী এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভো এয়ার ও এয়ার অ্যাস্ট্রা। অভ্যন্তরীণ রুটের বিস্তার লাভ করলে এয়ারলাইন্সগুলো দেশের বৃহদাংশ জনগোষ্টিকে আকাশপথে সেবা দেয়ার সুযোগ পাবে। সাথে সাথে জিডিপিতে অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারবে এভিয়েশন খাত। নতুন নতুন বিমানবন্দর নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র বিকাশে অগ্রণীভূমিকা পালন করতে পারবে। দেশের বিমানবন্দরগুলোর আধুনিকায়নের সাথে সাথে বেশ কয়েকটি নতুন এয়ারলাইন্সের আগমনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আর থার্ড টার্মিনালকে কেন্দ্র করে বর্তমানে পরিচালিত ৩৪টি বিদেশী এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানোর পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি বিদেশী এয়ারলাইন্স ঢাকা কেন্দ্রিক ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিচ্ছে। বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলোর কাছে ঢাকা একটি উল্লেখযোগ্য গন্তব্য হয়ে উঠছে। আর এই অধিক সংখ্যক ফ্লাইট এর যাত্রীদের সেবা দেয়ার লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরে আরো অধিক সংখ্যক বিমানবন্দর স্থাপন জরুরী হয়ে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের জন্য রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক না হয়ে ক্রস কান্ট্রি ধারণাকে সুচিন্তিতভাবে প্রতিস্থাপিত করতে পারলে যাত্রীদের সময় ও অর্থ দু’দিকেই সাশ্রয় হবে। অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর অবকাঠামোগুলোকে আরো বেশী যাত্রী বান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। নতুন নতুন রুট নতুন নতুন আশার সঞ্চার লাভ করাবে আকাশ পরিবহন। দেশের এভিয়েশন এন্ড ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি একটি দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে আমুল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। সেই প্রত্যাশায় আমরা সকলে।
লেখক মোঃ কামরুল ইসলাম মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স