ঢাকা ০১:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আস্থার কারণে বাংলাদেশকে দায়িত্ব জাতিসংঘের

  • আপডেট সময় : ০৫:০১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩
  • / 114
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চলতি বছরের ডিসেম্বরে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানায় বসছে জাতিসংঘের পিসকিপিং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। জাতিসংঘের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী পর্যায়ের প্রস্তুতিমূলক সভা এ মাসের শেষের দিকে ঢাকায় হতে যাচ্ছে। সভার মূল আলোচনায় থাকবে শান্তি মিশনে নারীদের অংশগ্রহণ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে জাতিসংঘের পিসকিপিং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভা করতে যাচ্ছে। এটি আগামী ২৫ ও ২৬ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ একশর বেশি অতিথি যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকায় হতে যাওয়া সভার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মূল সম্মেলন হবে ঘানায়। সেখানে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে তার প্রিলিমিনারি সব কিছুই এখানে হবে। আলাপ-আলোচনা, দরকষাকষি, পর্যালোচনা কিংবা কোনো কিছু যদি সাইনও হয়ে থাকে সব এখানে (ঢাকায়) হবে। পরে ঘানায় ফাইনালাইজেশনটা হবে। যার জন্য আমাদের এখানে যেটা হচ্ছে, এটা খুবই গুরত্বপূর্ণ।

মন্ত্রণালয়ের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘের প্রতি বছর পিসকিপিং মিনিস্ট্রিয়াল হয়। এ বছর ডিসেম্বরে ঘানায় সম্মেলন হবে। আর কো-চেয়ার হিসেবে থাকবে কানাডা। মূলত প্রস্তুতিমূলক সভা ঢাকায় হবে। জাতিসংঘ থেকে আমাদের অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা আগে একবার করেছি ২০১৭ সালে। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা আয়োজন করব। ইতোমধ্যে তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৫ ও ২৬ জুন এটা ঢাকায় হবে। আমাদের অনেক দায়িত্ব এ সভা নিয়ে। আমাদের সঙ্গে কানাডা সহযোগী আয়োজক। তারা উন্নত দেশ হিসেবে অর্থায়ন করবে।

সভায় মূল আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে জাতিসংঘ সামগ্রিক ইস্যুতে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা বা পর্যালোচনা হবে। তবে মূল ফোকাস হিসেবে থাকছে উইমেন ইন পিসকিপিং। পিসকিপিং-এ নারীদের অংশগ্রহণ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং পুলিশ এ সভার সমন্বয় করবে। এছাড়া জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, ঢাকার কানাডিয়ান দূতাবাস এবং জাতিসংঘের সদরদপ্তর সভার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে।

মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, ইতোমধ্যে সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মতি জানিয়েছে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি (লজিস্টিক)। এছাড়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সভা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভা থেকে বাংলাদেশ কীভাবে উপকৃত হতে পারে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, পিসকিপিং-এ বাংলাদেশ একটা লিডিং রোল প্লে করছে। ওই কনফিডেন্স থেকে জাতিসংঘ আমাদের অনুরোধ করেছে এটা করার জন্য। জাতিসংঘের আস্থার জায়গা থেকেই কিন্তু ঢাকায় এ ধরনের সভার প্রস্তাব দেওয়া। শান্তিমিশনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শান্তির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নারীদের শান্তিমিশনে অংশগ্রহণ আমাদের কাছে গুরত্বপূর্ণ। এসব কারণে এটা আমরা ঢাকায় করছি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন আমরা খুব ভালোভাবে ঢাকায় আয়োজন করেছি। এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করায় বাংলাদেশের প্রতি সবার আস্থা তৈরি হচ্ছে। সেজন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশকে এত বড় একটা দায়িত্ব দিল। এতে করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সবশেষ দক্ষিণ কোরিয়ায় জাতিসংঘের পিসকিপিং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন হয়েছিল। ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যোগ দিয়েছিলেন। আশা করা হচ্ছে, ডিসেম্বরে ঘানায় মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দেবেন ড. মোমেন।

উল্লেখ্য, গত মার্চের শেষে ঢাকায় ইউনেস্কোর ইন্টারগভর্নমেন্টাল ওশনোগ্রাফিক কমিশনের রিজিওনাল কমিটি ফর দ্য সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান ওশানের (আইওসিআইএনডিআইও) ৯ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মে মাসের শুরুতে ঢাকায় দুদিনব্যাপী ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের ষষ্ঠ আসর বসে।

এদিকে, আজ (১৩ জুন) থেকে সিলেটে দুই দিনব্যাপী ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওরা) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সভা বসছে। এছাড়া চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় বসবে দুই দিনব্যাপী কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম। প্রথমবারের মতো এটি ঢাকায় হতে যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

আস্থার কারণে বাংলাদেশকে দায়িত্ব জাতিসংঘের

আপডেট সময় : ০৫:০১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩

চলতি বছরের ডিসেম্বরে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানায় বসছে জাতিসংঘের পিসকিপিং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। জাতিসংঘের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী পর্যায়ের প্রস্তুতিমূলক সভা এ মাসের শেষের দিকে ঢাকায় হতে যাচ্ছে। সভার মূল আলোচনায় থাকবে শান্তি মিশনে নারীদের অংশগ্রহণ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে জাতিসংঘের পিসকিপিং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভা করতে যাচ্ছে। এটি আগামী ২৫ ও ২৬ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ একশর বেশি অতিথি যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকায় হতে যাওয়া সভার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মূল সম্মেলন হবে ঘানায়। সেখানে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে তার প্রিলিমিনারি সব কিছুই এখানে হবে। আলাপ-আলোচনা, দরকষাকষি, পর্যালোচনা কিংবা কোনো কিছু যদি সাইনও হয়ে থাকে সব এখানে (ঢাকায়) হবে। পরে ঘানায় ফাইনালাইজেশনটা হবে। যার জন্য আমাদের এখানে যেটা হচ্ছে, এটা খুবই গুরত্বপূর্ণ।

মন্ত্রণালয়ের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘের প্রতি বছর পিসকিপিং মিনিস্ট্রিয়াল হয়। এ বছর ডিসেম্বরে ঘানায় সম্মেলন হবে। আর কো-চেয়ার হিসেবে থাকবে কানাডা। মূলত প্রস্তুতিমূলক সভা ঢাকায় হবে। জাতিসংঘ থেকে আমাদের অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা আগে একবার করেছি ২০১৭ সালে। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা আয়োজন করব। ইতোমধ্যে তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৫ ও ২৬ জুন এটা ঢাকায় হবে। আমাদের অনেক দায়িত্ব এ সভা নিয়ে। আমাদের সঙ্গে কানাডা সহযোগী আয়োজক। তারা উন্নত দেশ হিসেবে অর্থায়ন করবে।

সভায় মূল আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে জাতিসংঘ সামগ্রিক ইস্যুতে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা বা পর্যালোচনা হবে। তবে মূল ফোকাস হিসেবে থাকছে উইমেন ইন পিসকিপিং। পিসকিপিং-এ নারীদের অংশগ্রহণ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং পুলিশ এ সভার সমন্বয় করবে। এছাড়া জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, ঢাকার কানাডিয়ান দূতাবাস এবং জাতিসংঘের সদরদপ্তর সভার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে।

মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, ইতোমধ্যে সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মতি জানিয়েছে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি (লজিস্টিক)। এছাড়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সভা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভা থেকে বাংলাদেশ কীভাবে উপকৃত হতে পারে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, পিসকিপিং-এ বাংলাদেশ একটা লিডিং রোল প্লে করছে। ওই কনফিডেন্স থেকে জাতিসংঘ আমাদের অনুরোধ করেছে এটা করার জন্য। জাতিসংঘের আস্থার জায়গা থেকেই কিন্তু ঢাকায় এ ধরনের সভার প্রস্তাব দেওয়া। শান্তিমিশনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শান্তির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নারীদের শান্তিমিশনে অংশগ্রহণ আমাদের কাছে গুরত্বপূর্ণ। এসব কারণে এটা আমরা ঢাকায় করছি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন আমরা খুব ভালোভাবে ঢাকায় আয়োজন করেছি। এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করায় বাংলাদেশের প্রতি সবার আস্থা তৈরি হচ্ছে। সেজন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশকে এত বড় একটা দায়িত্ব দিল। এতে করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সবশেষ দক্ষিণ কোরিয়ায় জাতিসংঘের পিসকিপিং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন হয়েছিল। ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যোগ দিয়েছিলেন। আশা করা হচ্ছে, ডিসেম্বরে ঘানায় মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দেবেন ড. মোমেন।

উল্লেখ্য, গত মার্চের শেষে ঢাকায় ইউনেস্কোর ইন্টারগভর্নমেন্টাল ওশনোগ্রাফিক কমিশনের রিজিওনাল কমিটি ফর দ্য সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান ওশানের (আইওসিআইএনডিআইও) ৯ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মে মাসের শুরুতে ঢাকায় দুদিনব্যাপী ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের ষষ্ঠ আসর বসে।

এদিকে, আজ (১৩ জুন) থেকে সিলেটে দুই দিনব্যাপী ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওরা) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সভা বসছে। এছাড়া চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় বসবে দুই দিনব্যাপী কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম। প্রথমবারের মতো এটি ঢাকায় হতে যাচ্ছে।