সংবাদ শিরোনাম :
বিমান টিকেট সিন্ডিকেট নির্মুলের আহবান মালয়েশিয়া আওয়ামীলীগ আহবায়কের
- আপডেট সময় : ০৯:০৭:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / 150
প্রবাসী কণ্ঠ প্রতিবেদক :
ঢাকা কুয়ালালামপুর রুটে বিমানের টিকেট সিন্ডিকেটের কারনে মালয়েশিয়ায় অভিবাসন ব্যয় বাড়ছে বলে মনে করছেন মালয়েশিয়া আওয়ামীলীগ শাখার আহবায়ক এম রেজাউল করিম রেজা। বাল্ক (পাইকারী) সিস্টেমে কোন কোন ট্রাভেল এজেন্সী বিক্রি করছে তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের নির্মুল করতে না পারলে শ্রমবাজারটি আরো সমস্যার মধ্যে পড়তে পারে। তাই টিকেট সিন্ডিকেট চক্রের কার্যক্রম দ্রুত বন্ধ হওয়া উচিত। বৃহস্পতিবার বিকেলে ফকিরাপুলের শতাব্দী সেন্টারের দ্য মাগুরা অ্যাসোসিয়েটের স্বত্বাধিকারী এবং মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ শাখার আহবায়ক এম রেজাউল করিম রেজার সাথে তার দফতরে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী যাওয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে তিনি এসবগুলো কথা বলেন। তিনি বলেন, করোনার কারনে আমাদের ব্যবসা বানিজ্য লাটে উঠেছিলো। যাক কুটনৈতিক চেষ্টার পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার অবশেষে খোলা সম্ভব হয়। তিনি বলেন এবার ১০০ সিন্ডিকেট সদস্য দিয়ে এই ব্যবসাটা শুরু হলেও আমি কিন্তু কোন সিন্ডিকেটের মধ্যে নাই। নিজে কাজ যোগাড় করে প্রসেসিং করে কর্মী পাঠাচ্ছি। এরমধ্যে বিমান টিকিট এখন ‘সোনার হরিনের’ মতো অবস্থা হয়েছে। টিকিটের আকাশচুম্বী দামের কারণে আমরা মহাটেনশনে আছি। তিনি বলেন, যদি তাৎক্ষণিক কোনো শ্রমিকের জন্য আমাদের টিকিটের প্রয়োজন পড়ে তাহলে কমপক্ষে ৭০ হাজার টাকা থেকে এক লাখেরও বেশি টাকা খরচ করে টিকিট কিনতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে সরাসরি গরিব শ্রমিকদের ওপরে। এসব আমাদের সরকারের সংশ্লিষ্টরা তো দেখছেন? আমি তাদের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করবো, দ্রুত এই টিকেট সিন্ডিকেট চক্রে কারা রয়েছে তাদের খতিয়ে চিহ্নিত করার জন্য। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও অনুরোধ জানাবো কেন এই রুটে বিমানের টিকিটের দাম হু হু করে বাড়ছে তা খতিয়ে দেখতে। তিনি এই চক্রকে দ্রুত উৎখাত করার জন্য মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ও বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে অনুরোধ করবো দ্রুত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে হলেও যেনো বিমান টিকিট সিন্ডিকেটকে নির্মূল করার পদক্ষেপ নেয়া হয়। এক প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম বলেন, সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাল্ক (পাইকারী) টিকিট ক্রয় করে সেগুলো পরবর্তীতে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছে। অথচ কয়েকদিন আগেও ঢাকা কুয়ালালামপুর ঢাকা রুটের টিকেটের দাম ২৫-৩০ হাজারের মধ্যেই ছিলো। অভিযোগ রয়েছে, অভিনব কৌশল অবলম্বন করে বিমান টিকিট সিন্ডিকেটের সদস্যরা এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে যোগসাজশ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এর আগে এই চক্রের অপতৎপরতা ঠেকাতে ট্র্যাভেল এজেন্টদের সংগঠন আটাবের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গত সপ্তাহের একদিনের ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে চলাচলকারী শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইন্স, মালিন্দ্য এয়ার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সগামী ফ্লাইটের পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যায়, ঢাকা থেকে ১৩ ঘটিকায় ছেড়ে শ্রীলঙ্কায় ৯ ঘণ্টার ট্রানজিটের শেষে কুয়ালালামপুর পৌঁছতে একজন যাত্রীর (২৫ কেজি মালামালসহ) ওয়ানওয়ে টিকিটের দাম দেখাচ্ছিল তিন হাজার ৫.১৪.৪৭ আরএম (মালয়েশিয়ান রিংগিট। যা বাংলা টাকায় ৯৪ হাজার ৮৭৮ টাকা। মালিন্দ্য এয়ারের যে ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে রাত ১টা ১০ মিনিটে ছেড়ে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট উড়ে সরাসরি মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে পৌঁছবে সেই ওয়ানওয়ে টিকিটের মূল্য দেখাচ্ছিল ৩ হাজার ৮’শ ৩২ রিংগিট। এক রিংগিট ২৭ টাকা হিসাবে ধরলে বাংলাদেশী টাকায় মূল্য হয় এক লাখ ৩ হাজার ৪৬৪ টাকা। একইভাবে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের পৃথক দুটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে ছাড়ার সময়ের হিসাবে টিকিটের মূল্য দেখাচ্ছে (৭ এবং ১৭ ঘণ্টার ট্রানজিটসহ) ৬ হাজার ১’শ ৯৫ রিংগিট। যা একজন যাত্রীর ক্ষেত্রে বাংলাদেশী টাকায় বিমান টিকিটের দাম পড়ছে এক লাখ ৬৭ হাজার ২৬৫ টাকা। এই মুহূর্তে ঢাকা কুয়ালালামপুরে যাতায়াতকারী যেকোনো পেশার যাত্রীদের জন্যই টিকিটের দাম এরকমই অনলাইনে শো করছে বলে জানিয়েছেন টিকিট ব্যবসার সাথে সম্পৃক্তরা। গতকাল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলসের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, মালয়েশিয়া রুটে বিমানের ফ্রিকোয়েন্সি না পাওয়ায় ফ্লাইট বাড়ানো যাচ্ছে না। এর ফলে প্রতিদিন এই রুটে চলাচলকারী বিমানের একটি এয়ারক্রাফট দিয়েই (কখনো বোয়িং ৭৩৭ আবার কখনো ৭৮৭ ড্রিমলাইনার) ফ্লাইট চালাচ্ছি আমরা। তিনি বলেন, আমাদের বিমানের ওয়ানওয়ে টিকিটর দাম শুরু হয় ২৬ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে। সময় বাড়ার সাথে সাথে সেটির দামও অটোমেটিকেলি বাড়তে থাকে। আমাদের বিমানের একটি টিকিট এখন সর্বোচ্চ ৫৩ অথবা ৫৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের টিকিট বিক্রি হচ্ছে ওপেন ফর অল পদ্ধতিতে। বাল্ক সিস্টেমে টিকিট বিক্রি হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি বিমান কোনো বাল্ক (লট) টিকিট বিক্রি করে না। তবে আমরাও বাজারে শুনতে পাচ্ছি বাল্ক টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এমন ডকুমেন্ট যদি কেউ আমাদের দিতে পারতো আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতাম।