ঢাকা ০৫:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদেশফেরতদের জন্য কোয়ারেন্টাইন তুলে নিল চীন

  • আপডেট সময় : ০৬:১৭:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৩
  • / 129
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অভ্যন্তরীণ বা বিদেশফেরত ভ্রমণকারীদের জন্য কোয়ারেন্টাইন বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে চীন। রোববার (৮ জানুয়ারি) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। এর মাধ্যমে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে প্রায় তিন বছর ধরে স্ব-আরোপিত বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটাল দেশটি।

অবশ্য এশিয়ার এই দেশটিতে সম্প্রতি করোনার প্রকোপ অনেকটা বেড়েছে। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। গত ডিসেম্বরে নাটকীয়ভাবে জিরো কোভিড নীতি বাতিলের ঘোষণা দেয় চীন। কঠোর ওই নীতির মাধ্যমে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন এবং কঠোর লকডাউন কার্যকর করত দেশটি। আর এরপর থেকে করোনাভাইরাসের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হয়েছে চীন। প্রত্যেক দিন অসংখ্য মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দেশটিতে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

মূলত কঠোর জিরো কোভিড পলিসির বিরুদ্ধে চীনের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভের কারণে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে করোনা সংক্রান্ত সব কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে চীন। সেসময় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, যদি এখন কেউ করোনায় আক্রান্ত হন তাহলে তাকে সরকার নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যেতে হবে না। এর বদলে আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়ি এবং পরিবারের কাছে থাকতে পারবেন এবং বাড়িতে বসেই করোনা পরীক্ষা করতে পারবেন।

আগে কেউ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাকে জোর করে বাড়ি থেকে নিয়ে যেতেন সরকারি কর্মকর্তারা। এমনকি গত বছরের নভেম্বরেও একজনকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল।

আর কঠোর নীতির চূড়ান্ত উন্মোচনে রোববার থেকে চীনে আগত ভ্রমণকারীদের আর কোয়ারেন্টাইনের প্রয়োজন হবে না। এর আগে ২০২০ সালের মার্চ থেকে, চীনে পৌঁছানো সকল ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় সরকারি অবকাঠামোতে কোয়ারেন্টাইনে বাধ্য করা হতো।

কোয়ারেন্টাইন বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর চীনের লোকেরা জনপ্রিয় ভ্রমণ ওয়েবসাইটগুলোতে বিদেশে ভ্রমণ বিষয়ক অনুসন্ধান শুরু করেন। কিন্তু চীনে করোনার উল্লম্ফনের ফলে এক ডজনেরও বেশি দেশ চীন থেকে আসা যাত্রীদের ওপর বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষাসহ নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে।

অবশ্য বিধিনিষেধ সত্ত্বেও চীনের অনেকেই দেশের বাইরে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন। কোভিড পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা সত্ত্বেও ২৮ বছর বয়সী ঝাং কাই এএফপিকে বলেছেন, তিনি দক্ষিণ কোরিয়া বা জাপানে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন।

ঝাং বলেন, ‘আমি খুশি, এখন অবশেষে (আমি) যেতে পারি’। তার বন্ধুরা কোভিড পরীক্ষা করে ইতোমধ্যেই জাপানে পৌঁছেছে। আর কোভিড পরীক্ষার বিষয়টিকে তিনি ‘ছোট ব্যাপার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

অবশ্য চীন থেকে আসা ভ্রমণকারীদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ জারির বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে দেশটি। বেইজিং এগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সমালোচনা করেছে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বিদেশফেরতদের জন্য কোয়ারেন্টাইন তুলে নিল চীন

আপডেট সময় : ০৬:১৭:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৩

অভ্যন্তরীণ বা বিদেশফেরত ভ্রমণকারীদের জন্য কোয়ারেন্টাইন বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে চীন। রোববার (৮ জানুয়ারি) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। এর মাধ্যমে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে প্রায় তিন বছর ধরে স্ব-আরোপিত বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটাল দেশটি।

অবশ্য এশিয়ার এই দেশটিতে সম্প্রতি করোনার প্রকোপ অনেকটা বেড়েছে। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। গত ডিসেম্বরে নাটকীয়ভাবে জিরো কোভিড নীতি বাতিলের ঘোষণা দেয় চীন। কঠোর ওই নীতির মাধ্যমে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন এবং কঠোর লকডাউন কার্যকর করত দেশটি। আর এরপর থেকে করোনাভাইরাসের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হয়েছে চীন। প্রত্যেক দিন অসংখ্য মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দেশটিতে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

মূলত কঠোর জিরো কোভিড পলিসির বিরুদ্ধে চীনের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভের কারণে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে করোনা সংক্রান্ত সব কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে চীন। সেসময় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, যদি এখন কেউ করোনায় আক্রান্ত হন তাহলে তাকে সরকার নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যেতে হবে না। এর বদলে আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়ি এবং পরিবারের কাছে থাকতে পারবেন এবং বাড়িতে বসেই করোনা পরীক্ষা করতে পারবেন।

আগে কেউ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাকে জোর করে বাড়ি থেকে নিয়ে যেতেন সরকারি কর্মকর্তারা। এমনকি গত বছরের নভেম্বরেও একজনকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল।

আর কঠোর নীতির চূড়ান্ত উন্মোচনে রোববার থেকে চীনে আগত ভ্রমণকারীদের আর কোয়ারেন্টাইনের প্রয়োজন হবে না। এর আগে ২০২০ সালের মার্চ থেকে, চীনে পৌঁছানো সকল ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় সরকারি অবকাঠামোতে কোয়ারেন্টাইনে বাধ্য করা হতো।

কোয়ারেন্টাইন বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর চীনের লোকেরা জনপ্রিয় ভ্রমণ ওয়েবসাইটগুলোতে বিদেশে ভ্রমণ বিষয়ক অনুসন্ধান শুরু করেন। কিন্তু চীনে করোনার উল্লম্ফনের ফলে এক ডজনেরও বেশি দেশ চীন থেকে আসা যাত্রীদের ওপর বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষাসহ নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে।

অবশ্য বিধিনিষেধ সত্ত্বেও চীনের অনেকেই দেশের বাইরে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন। কোভিড পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা সত্ত্বেও ২৮ বছর বয়সী ঝাং কাই এএফপিকে বলেছেন, তিনি দক্ষিণ কোরিয়া বা জাপানে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন।

ঝাং বলেন, ‘আমি খুশি, এখন অবশেষে (আমি) যেতে পারি’। তার বন্ধুরা কোভিড পরীক্ষা করে ইতোমধ্যেই জাপানে পৌঁছেছে। আর কোভিড পরীক্ষার বিষয়টিকে তিনি ‘ছোট ব্যাপার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

অবশ্য চীন থেকে আসা ভ্রমণকারীদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ জারির বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে দেশটি। বেইজিং এগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সমালোচনা করেছে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে।