৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী নেবে মালয়েশিয়া

  • আপডেট সময় : ০৩:৪৭:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুন ২০২২
  • / 156
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানিয়েছেন, চলতি মাস (জুন) থেকেই মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন বাংলাদেশি কর্মীরা। সর্বনিম্ন বেতন হবে ৩০ হাজার ৪০০ টাকা (১৫০০ রিঙ্গিত)।

ইমরান আহমদ বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে ৫ লাখ কর্মী নেওয়ার কথা জানিয়েছে মালয়েশিয়া। প্রথম বছর দুই লাখ। তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে তাদের যত কর্মীর চাহিদা, তাতে প্রথম বছরই পাঁচ লাখ লোক যাবে।আমি মন্ত্রী হওয়ার পর ভেবেছিলাম মালয়েশিয়ার বাজারে কর্মী পাঠাতে পারব না। হয়ত ব্যর্থ হয়েই বাড়ি ফিরব। আজ একটি সমঝোতায় এসেছি। জুন মাসের মধ্যে কর্মী পাঠানো শুরু করব।’

তিনি বলেন, আজ আমাদের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা বন্ধ সেক্টরগুলো খুলবে। তাদের কর্মী তালিকা দেওয়া হবে, সেখান থেকে যাবে। তাদের সিলেকশন অনুযায়ী মেডিকেল হবে।

প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো সিন্ডিকেট নয়, আমরা তাদের দেশের সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা পাঠিয়েছি। এটি পছন্দ তাদের। তারা লোক নেবে তাদের পছন্দে।’

মালয়েশিয়া যেতে একজন কর্মীর কত টাকা খরচ হবে- জানতে চাইলে ইমরান আহমদ বলেন, ‘মালয়েশিয়ার মন্ত্রী আমাদের বলেছেন যে, তারা জিরো খরচে লোক নিতে চেষ্টা করবেন। আশা করছি, আগের যে হিসাব এক লাখ ৬০ হাজার টাকার যে কথা ছিল, এবার তার চেয়ে কম হবে।’

মন্ত্রী ইমরান জানান, ‘আসা-যাওয়ার টিকিট, মালয়েশিয়ায় কোভিড-১৯ পরীক্ষা, কোয়ারেন্টিন, থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন খরচ নিয়োগদাতা বহন করবে। বাংলাদেশের অংশে পাসপোর্ট, মেডিকেলসহ অন্যান্য খরচ কর্মীকে বহন করতে হবে।’

ঢাকা: দুই পক্ষ মিলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (০২ জুন) গণভবনে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।

টিকাদান এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতাসহ প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রোটোকল বজায় রেখে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

দুই দেশের মধ্যে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে স্বাক্ষরিত শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত এমওইউ-এর পৃষ্ঠপোষকতায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ায় গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান।

বেসামরিক কাজের জন্য বাংলাদেশি নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ সফররত মালয়শিয়ার মন্ত্রীকে স্বাগত জানান তিনি।

দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।

বৈঠকে মালয়শিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী মালয়েশিয়ায় চলমান জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পুনর্গঠন এবং আইএলও নির্দেশিকা অনুসরণ করে তাদের অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থান প্রক্রিয়া সুগম করার বিষয়ে অবহিত করেন।

দাতুক সেরি এম. সারাভানান বলেন, আমরা অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ৫ বছরের কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি। এই লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ন্যূনতম মজুরি ১৫০০ আরএমএ বাড়ানো হয়েছে।

মালয়েশিয়ার মন্ত্রী জানান, তারা এখন সব কর্মসংস্থান প্রক্রিয়া ডিজিটাইজ করেছেন, যাতে প্রতিটি পদক্ষেপে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা হয়।

মালয়েশিয়া শুধু চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা নিয়োগকারী সংস্থাকে মাঝখানে না রেখেই নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে কর্মীদের বেতন কার্ড অ্যাকাউন্টে সরাসরি ই-পেমেন্ট ইনস্টল করেছেন।

দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এমওইউ বাস্তবায়ন বিলম্বিত হওয়ায় তিনি মানব পাচারের সম্ভাবনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী নেবে মালয়েশিয়া

আপডেট সময় : ০৩:৪৭:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুন ২০২২

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানিয়েছেন, চলতি মাস (জুন) থেকেই মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন বাংলাদেশি কর্মীরা। সর্বনিম্ন বেতন হবে ৩০ হাজার ৪০০ টাকা (১৫০০ রিঙ্গিত)।

ইমরান আহমদ বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে ৫ লাখ কর্মী নেওয়ার কথা জানিয়েছে মালয়েশিয়া। প্রথম বছর দুই লাখ। তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে তাদের যত কর্মীর চাহিদা, তাতে প্রথম বছরই পাঁচ লাখ লোক যাবে।আমি মন্ত্রী হওয়ার পর ভেবেছিলাম মালয়েশিয়ার বাজারে কর্মী পাঠাতে পারব না। হয়ত ব্যর্থ হয়েই বাড়ি ফিরব। আজ একটি সমঝোতায় এসেছি। জুন মাসের মধ্যে কর্মী পাঠানো শুরু করব।’

তিনি বলেন, আজ আমাদের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা বন্ধ সেক্টরগুলো খুলবে। তাদের কর্মী তালিকা দেওয়া হবে, সেখান থেকে যাবে। তাদের সিলেকশন অনুযায়ী মেডিকেল হবে।

প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো সিন্ডিকেট নয়, আমরা তাদের দেশের সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা পাঠিয়েছি। এটি পছন্দ তাদের। তারা লোক নেবে তাদের পছন্দে।’

মালয়েশিয়া যেতে একজন কর্মীর কত টাকা খরচ হবে- জানতে চাইলে ইমরান আহমদ বলেন, ‘মালয়েশিয়ার মন্ত্রী আমাদের বলেছেন যে, তারা জিরো খরচে লোক নিতে চেষ্টা করবেন। আশা করছি, আগের যে হিসাব এক লাখ ৬০ হাজার টাকার যে কথা ছিল, এবার তার চেয়ে কম হবে।’

মন্ত্রী ইমরান জানান, ‘আসা-যাওয়ার টিকিট, মালয়েশিয়ায় কোভিড-১৯ পরীক্ষা, কোয়ারেন্টিন, থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন খরচ নিয়োগদাতা বহন করবে। বাংলাদেশের অংশে পাসপোর্ট, মেডিকেলসহ অন্যান্য খরচ কর্মীকে বহন করতে হবে।’

ঢাকা: দুই পক্ষ মিলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (০২ জুন) গণভবনে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।

টিকাদান এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতাসহ প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রোটোকল বজায় রেখে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

দুই দেশের মধ্যে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে স্বাক্ষরিত শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত এমওইউ-এর পৃষ্ঠপোষকতায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ায় গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান।

বেসামরিক কাজের জন্য বাংলাদেশি নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ সফররত মালয়শিয়ার মন্ত্রীকে স্বাগত জানান তিনি।

দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।

বৈঠকে মালয়শিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী মালয়েশিয়ায় চলমান জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পুনর্গঠন এবং আইএলও নির্দেশিকা অনুসরণ করে তাদের অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থান প্রক্রিয়া সুগম করার বিষয়ে অবহিত করেন।

দাতুক সেরি এম. সারাভানান বলেন, আমরা অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ৫ বছরের কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি। এই লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ন্যূনতম মজুরি ১৫০০ আরএমএ বাড়ানো হয়েছে।

মালয়েশিয়ার মন্ত্রী জানান, তারা এখন সব কর্মসংস্থান প্রক্রিয়া ডিজিটাইজ করেছেন, যাতে প্রতিটি পদক্ষেপে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা হয়।

মালয়েশিয়া শুধু চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা নিয়োগকারী সংস্থাকে মাঝখানে না রেখেই নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে কর্মীদের বেতন কার্ড অ্যাকাউন্টে সরাসরি ই-পেমেন্ট ইনস্টল করেছেন।

দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এমওইউ বাস্তবায়ন বিলম্বিত হওয়ায় তিনি মানব পাচারের সম্ভাবনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।