ঢাকা ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইতালী পাড়ি দেয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে প্রান হারিয়েছেন ৭৬০ জন

  • আপডেট সময় : ০৫:২৬:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
  • / 11
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

 

 

চলতি বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালীতে পাড়ি জমানো অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশীরা। অপরদিকে এই ৬ মাসে ইউরোপের দেশগুলোতে পাড়ি জমাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৬০ অভিবাসন প্রত্যাশী।

সম্প্রতি ইতালী সরকারের উর্দ্ধৃতি দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্স।

সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এবং পশ্চিম আফ্রিকান রুট দিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশী আসার সংখ্যা অনেক কমে যাওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রম গত বছরের প্রথম ৬ মাসের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে।

সংস্থাটি বলেছে, সার্বিকভাবে অভিবাসন প্রত্যাশী আসার হার কমে আসলেও সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুট এখনও ব্যস্ত রয়েছে। তবে, পশ্চিম বলকান, পূর্ব স্থল সীমান্ত এবং পশ্চিম আফ্রিকান অভিবাসন রুট দিয়ে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীর সংখ্যা অনেক কমেছে।

ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে আসা অভিবাসীদের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা। এরপরেই আছে মিশর ও আফগানিস্তানের নাম।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুট দিয়ে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ২৫ ভাগ কমে হয়েছে ১৯ হাজার ৬’শ। তবে, লিবিয়ার উপকূল থেকে গ্রিক দ্বীপ ক্রিট পর্যন্ত নতুন পথ তৈরি হওয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই রুটে অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়েছে।

সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুটে ২৯ হাজার ৩০০ জন অভিবাসন প্রত্যাশী এসেছেন বলে জানিয়েছে ফ্রন্টেক্স। সংখ্যাটি ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।
এই বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রার জন্য লিবিয়া এখনও প্রধানতম ট্রানজিট দেশ। দেশটির উপকূল থেকে ২০ হাজার ৮০০ অভিবাসী ইতালিতে এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।

চলতি বছর ১০ হাজার ৩১১ জন বাংলাদেশি এসেছেন ইতালিতে। যা মোট আগমনের ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ইরিত্রিয়ার নাম। চার হাজার ৪৬১ জন ইরিত্রিয়ান এসেছেন ইতালিতে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা মিশরের নাগরিকের সংখ্যা তিন হাজার ৭২৩। এরপরে আছে পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, সুদান, সিরিয়া, সোমালিয়া, গিনি, টিউনিশিয়া, আলজেরিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, মালি ও আইভরিকোস্টের নাম।

৭ জুলাই পর্যন্ত ইতালিতে আসা সঙ্গীবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৫৭৫। আর ২০২৪ সালে পুরো বছর মিলিয়ে এসেছিলেন আট হাজার ৭৫২ জন।

লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সুত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে কৌশলে ফুসলিয়ে বাংলাদেশীদের নিয়ে যাচ্ছে মানবপাচারকারী দলের সদস্যরা। এরপর তাদেরকে চুক্তি অনুযায়ী সাগরপাড়ে রেখে সময় সুযোগ বুঝে কাঠের ট্রলারে তুলে দেয়। চক্রটির বিরুদ্ধে বিস্তারিত উল্লেখ করে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস প্রতি মাসেই প্রতিবেদন পাঠাচ্ছে। কিন্তু আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের অনীহার কারণে চক্রের সদস্যরা মাঝেমধ্যে ধরা পড়লেও বেশীরভাগ সময় থাকছে ধরাছোয়ার বাইরে। যার পরিনতিতে সাগরে ডুবে জীবন হারাচ্ছে বাংলাদেশীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ইতালী পাড়ি দেয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে প্রান হারিয়েছেন ৭৬০ জন

আপডেট সময় : ০৫:২৬:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

 

 

চলতি বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালীতে পাড়ি জমানো অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশীরা। অপরদিকে এই ৬ মাসে ইউরোপের দেশগুলোতে পাড়ি জমাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৬০ অভিবাসন প্রত্যাশী।

সম্প্রতি ইতালী সরকারের উর্দ্ধৃতি দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্স।

সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এবং পশ্চিম আফ্রিকান রুট দিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশী আসার সংখ্যা অনেক কমে যাওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রম গত বছরের প্রথম ৬ মাসের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে।

সংস্থাটি বলেছে, সার্বিকভাবে অভিবাসন প্রত্যাশী আসার হার কমে আসলেও সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুট এখনও ব্যস্ত রয়েছে। তবে, পশ্চিম বলকান, পূর্ব স্থল সীমান্ত এবং পশ্চিম আফ্রিকান অভিবাসন রুট দিয়ে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীর সংখ্যা অনেক কমেছে।

ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে আসা অভিবাসীদের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা। এরপরেই আছে মিশর ও আফগানিস্তানের নাম।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুট দিয়ে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ২৫ ভাগ কমে হয়েছে ১৯ হাজার ৬’শ। তবে, লিবিয়ার উপকূল থেকে গ্রিক দ্বীপ ক্রিট পর্যন্ত নতুন পথ তৈরি হওয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই রুটে অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়েছে।

সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুটে ২৯ হাজার ৩০০ জন অভিবাসন প্রত্যাশী এসেছেন বলে জানিয়েছে ফ্রন্টেক্স। সংখ্যাটি ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।
এই বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রার জন্য লিবিয়া এখনও প্রধানতম ট্রানজিট দেশ। দেশটির উপকূল থেকে ২০ হাজার ৮০০ অভিবাসী ইতালিতে এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।

চলতি বছর ১০ হাজার ৩১১ জন বাংলাদেশি এসেছেন ইতালিতে। যা মোট আগমনের ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ইরিত্রিয়ার নাম। চার হাজার ৪৬১ জন ইরিত্রিয়ান এসেছেন ইতালিতে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা মিশরের নাগরিকের সংখ্যা তিন হাজার ৭২৩। এরপরে আছে পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, সুদান, সিরিয়া, সোমালিয়া, গিনি, টিউনিশিয়া, আলজেরিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, মালি ও আইভরিকোস্টের নাম।

৭ জুলাই পর্যন্ত ইতালিতে আসা সঙ্গীবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৫৭৫। আর ২০২৪ সালে পুরো বছর মিলিয়ে এসেছিলেন আট হাজার ৭৫২ জন।

লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সুত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে কৌশলে ফুসলিয়ে বাংলাদেশীদের নিয়ে যাচ্ছে মানবপাচারকারী দলের সদস্যরা। এরপর তাদেরকে চুক্তি অনুযায়ী সাগরপাড়ে রেখে সময় সুযোগ বুঝে কাঠের ট্রলারে তুলে দেয়। চক্রটির বিরুদ্ধে বিস্তারিত উল্লেখ করে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস প্রতি মাসেই প্রতিবেদন পাঠাচ্ছে। কিন্তু আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের অনীহার কারণে চক্রের সদস্যরা মাঝেমধ্যে ধরা পড়লেও বেশীরভাগ সময় থাকছে ধরাছোয়ার বাইরে। যার পরিনতিতে সাগরে ডুবে জীবন হারাচ্ছে বাংলাদেশীরা।