কারা পোশাকে অনীহা, ৬৮ কারাগারে কঠোর বার্তা
- আপডেট সময় : ১১:৪৬:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪
- / 53
খায়রুল আলম :
কারা কর্মকতা-কর্মচারীদের ইউনিফর্ম পরিধানে অনীহায় ক্ষেপেছে কারা সদর দপ্তর। অভিযোগ উঠেছে, ইউনিফর্ম না পড়ে তাদের অনেকেই নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। কর্তব্যরত অবস্থায় নিজেদের নজরদারীর বাইরে রাখতেই তারা এমনটি করছেন বলে উঠে এসেছে একাধিক সংস্থার প্রতিবেদনে।
সবশেষ গত ১৮ নভেম্বর দেশের ৬৮ টি কারাগারে কড়া নির্দেশনা সম্বলিত চিঠি পাঠিয়েছে কারা সদর দপ্তর। ব্যতয় ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের হুশিয়ারীও দেয়া হয়েছে।
কারা অধিদপ্তরের উপ মহাপরিদর্শক (ঢাকা) মো. জাহাঙ্গীর কবির প্রবাসী কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশ জেলের ইউনিফর্মধারী প্রতিটি সদস্যের জন্যই পোশাক নীতিমালা অনুসরণ বাধ্যতামূলক। এর কিছু ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হচ্ছে। সেকারণেই কারা সদরদপ্তর থেকে পোশাক নীতিমালা-২০১৬ যথাযথভাবে অনুসরণের জন্য তাগিদপত্র প্রদান করা হয়েছে। সে অনুসারে ঢাকা বিভাগে কর্মরত বাংলাদেশ জেলের প্রতিটি সদস্যকে তা কঠোরভাবে অনুসরণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৮ নভেম্বর কারা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কর্ণেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত “বাংলাদেশ জেল পোশাক নীতিমালা-২০১৬ অনুযায়ী ইউনিফর্ম পরিধান সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ কারা উপ মহাপরিদর্শক (সকল সদর দফতর), কমান্ড্যান্ট কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রাজশাহী, সিনিয়র জেল সুপার, জেলারসহ (সকল জেলা কারাগার) সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। ওই বার্তায় পোশাক পরিধানের নির্দেশনা মানার পাশাপাশি কিছু বিষয় অনুসরন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কারা সূত্র বলছে, গাজিপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারসহ দেশের ৬৮ কারাগারে (নরসিংদী ছাড়া) কর্তব্যরত কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনেকেই জেল পোশাক পড়ে ডিউটি করছেন না। এর আগেও ইউনিফর্ম পড়ার ব্যাপারে কারা সদরের কড়াকড়ি আরোপ করার পরও তাতে থোড়াই কেয়ার করছিলেন তারা।
কারা সদর দপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনার অধীনস্ত কারাগারগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের সুত্রস্ত স্মারকের আলোকে পোশাক পরিধানের নির্দেশনা দেয়ার পরও তা যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না। যা শৃংখলাবাহিনীর সদস্য হিসাবে কাম্য নয়। বাংলাদেশ জেল পোশাক নীতিমালা ২০১৬ পালনের পাশাপাশি গার্ডিং স্টাফদের শার্ট প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় ডিএমএস বুট পরিধানসহ ৫টি নিয়ম অনুসরন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
পোশাক পরার নিয়ম অনুসরনের মধ্য আরো রয়েছে, বয়স ৪০ বছরের বেশী মহিলা গার্ডিং স্টাফদের গাঢ় সবুজ ( ডিপ গ্রীন) শাড়ীর সাথে বরাদ্দকৃত শার্ট পরিধান করতে হবে। শাড়ি পরা অবস্থায় লেডিস স্যু পরতে হবে।
বয়স অনুর্ধ ৪০ বছর পর্যন্ত মহিলা গার্ডিং স্টাফদের শার্ট প্যান্ট ও ডিএমএস বুট পরিধান করতে হবে। এছাড়া অন্ত:স্বত্তা মহিলা গার্ডিং স্টাফদের গাঢ়ো সবুজ রংগের শাড়ির সাথে ( ডিপ গ্রীন) বরাদ্দকৃত শার্ট পরতে হবে। একই সাথে ‘শোল্ডার লেটার’ ও ‘ব্যাজেজ অব র্যাংক’ কারা কর্মকর্তা ও গার্ডিং স্টাফদের বরাদ্দ করা পোশাকের শার্টের উভয়পাশে কাধে সোনালী রংয়ের (ধাতব পর্দাথ দ্বারা নির্মিত) পরা নিশ্চিত করার কথা চিঠিতে বলা হয়েছে।
গতকাল কারা সদর দপ্তরের এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, আগের সরকারের সময়ে অনেক কারাগারের জেলার সুপাররা কারাগারের দেয়া পোশাক পরতেন না। এরই ধারাবাহিকতা এখনো চলছে। তিনি আরো বলেন, কারা কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবশ্যই শৃংখলা মেনে চলতে হবে। এব্যপারে এখন থেকে আর ছাড় দিবে না কারা সদর।
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর, রাত ১১টা ৫০ মিনিট