ঢাকা ০৭:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মালয়েশিয়া শ্রমবাজার সর্ষের মধ্যেই ভূত!

  • আপডেট সময় : ০৩:৪২:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪
  • / 44
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় নষ্ট হচ্ছে সরকারের ইমেজ

 বাংলাদেশে এসোসিয়েশন অব রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হওয়া ও নানা সংকটের জন্য দায়ী বায়রার এই নেতা। তার হাত ধরেই সর্বনাশ নেমে এসেছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে।

অভিযোগ রয়েছে, হাসিনার আমলে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নিয়োগ বাণিজ্যে ১০সিন্ডিকেটের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ছিলেন তিনি। মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাণিজ্যের জন্য বাগিয়ে নিয়েছিলেন নিজের মেডিকেল সেন্টার ওয়েলকাম মেডিকেল। প্রায় ৭০হাজার কর্মীর নাম মাত্র স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এই মৌসুমে আবার পরিচয় লুকিয়ে কমপক্ষে দুইটি লাইসেন্স রয়েছে ১০১ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকায়। সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকাতেও রয়েছে তার এজেন্সি। সাথে আছে নিজস্ব মেডিকেল সেন্টার ওয়েলকাম মেডিকেল।

চলতি বছর ৩১মে শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার পর তিনিসহ আরো কয়েকজন মিলে আবার চেষ্টা করছেন মালয়েশিয়ায় ভিন্ন ফর্মুলায় লোক পাঠানোর শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠনে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার ক্ষমতাশীল একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতাধর কতিপয় নেতার সাথে তাদের কয়েক জনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হয়। জানা যায়, একটি রাজনৈতিক প্রোগ্রামে মোটা অংকের অর্থ স্পন্সর করার সুত্রে দাওয়াত পান ফখরুল ও তার অনুসারীরা। শুধু তাই নয়, দেখা করেছিলেন স্বয়ং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম তার প্রস্তাব নাকচ করে দেয়ায় দেশে ফিরে এখন নিজেকে বঞ্চিত দাবী করে শুরু করেছে নানা অপতৎপরতা।

ফখরুলের বিরুদ্ধে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন টকশো, সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে ভুল এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে শ্রমবাজারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। তার বক্তব্যগুলো তার অনুসারীরা মালয়েশিয়াতে ছড়িয়ে দেয়ায় সম্ভাব্য নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশী শ্রমিক বিমুখ হচ্ছেন।
বায়রার একজন সদস্য জানান, মালয়েশিয়ার জনশক্তি রফতানীতে একক ব্যক্তি হিসেবে সবচাইতে লাভবান ফকরুল ইসলাম। তিনি সবসময় সিন্ডিকেটে ছিলেন। তার আছে নিজস্ব মেডিকেল সেন্টার। আছে একাধিক সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সি। বেনামে ১০১ রিক্রুটিং এজেন্সিরও দুটি তার। তার মেডিকেল সেন্টারের নামে ওয়েলকাম ডায়াগনস্টিক এন্ড মেডিকেল সেন্টার। তার রিক্রুটিং এজেন্সির নাম হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরএল ৪৫২)।

বায়রা সদস্যরা বলেন, একশ’ এক সিন্ডিকেট ভুক্ত তার বেনামী প্রতিষ্ঠান ত্রিবেনি ইন্টারন্যাশনাল ও সেলিব্রেটি ইন্টারন্যাশনাল। যার নেপথ্য মালিক ফখরুল ইসলামের। তিনি নিজের লাইসেন্স সরাসরি ব্যবহার না করে অন্যের নামে ব্যবসা করছেন। অন্য যারা ব্যবসা করেন তাদের লাইসেন্স একটা অথচ তারর লাইসেন্স ২ টা। তাছাড়া অন্য ব্যবসায়ীরা হয়তো মূল ১০১ এজেন্সির মধ্যে অথবা সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ছিলেন। কেউ কেউ শুধু মেডিকেল সেন্টারে ছিলেন। তিনি একমাত্র ব্যক্তি সব জায়গায় আছেন। তিনি প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিকের মেডিকেল চেকআপ করিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি মালয়েশিয়া থেকে ডিমান্ড (চাহিদাপত্র) সংগ্রহ করে বিভিন্ন এজেন্সিকে সরবরাহ করেছেন। তারা ডিমান্ড সংগ্রহ করার শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, তিনি ও তার সহযোগী সিন্ডিকেটের কারণে মালশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে। সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো শুধু একটা টিকেট কেটে শ্রমিকদের কাছ থেকে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা নিয়েছে। অথচ তারা আইনের আওতায় আসছে না। মন্ত্রণালয়ের নজরে আসছে না। একদিকে তারা বলছে, ৬ লাখ টাকা করে শ্রমিক গিয়েছে আবার বলছে তারা দেড় লাখ টাকা ১০১ রিক্রুটিং এজেন্সিভুক্তদের দিয়েছে। অনুমোদিত এজেন্সিগুলো ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে এলোকেশন, জব, ডিমান্ড লেটার, সত্যায়ন, ভিসা করানো, বিটিএমইএর ক্লিয়ারেন্স, নিয়োগানুমতি ও বর্হিগমনসহ যাবতীয় আনুসাঙ্গিক কাজ সম্পাদন করেছে। আর সহযোগী এজেন্সিরা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার একটি টিকেট করে সাড়ে ৪ লাখ টাকা করে নিয়েছে। এসব তথ্য গোপন রেখে এই চক্রটিই আবার বড় বড় কথা বলছে।

অপর এজন ব্যবসায়ী জানান, বায়রার যুগ্মমহাসচিবসহ ওইসব নেতাদের আগে জবাবহিতার আওতায় আনা জরুরী। যেহেতু ওরা বেশি টাকা নিয়েছে এবং কাজটা এনেছে তাহলে টাকা তারাই পাচার করেছে। সহযোগী রিক্রুটিং হিসেবে তারা কাজ কিনেছে। ওয়ার্কারদের অর্থও তারা দিয়েছে। সাপ্লাই চেইন ও মার্কেটিং চেইন তাদের। বেশি অর্থ নেওয়ার জন্য তারাই দায়ী। অর্থপাচার জন্যও তারা দায়ী। অথচ জনসাধারণকে বোকা বানিয়ে এক তরফা তারা নানামুখী অপপ্রচার করছে।

অভিযোগের বিষয়ে বায়রার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে এখন অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন মিডিয়াতে সিন্ডিকেটের বিপক্ষে কথা বলায় নতুন সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আমি মালয়েশিয়ার একজন ব্যবসায়ী। মালয়েশিয়া কর্মী পাঠানো আমার অধিকার। আমি কর্মী পাঠিয়েছি কিন্তু আমি সিন্ডিকেট তো করিনি। বরং সিন্ডিকেট কে চাঁদা দিয়ে আমাকে কর্মী পাঠাতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমি সম্মানিত সদস্যদের অধিকার রক্ষায় কথা বলে যাবো। আমার কোথাও কোনো কর্মীর সমস্যা হলে আমি অবশ্যই দায়িত্ব নেবো। দয়া করে কেউ মাথা নষ্ট করবেন না।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে মাত্র ২২ মাসে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গিয়েছে। এই অভিবাসী শ্রমিকরা দেশের জন্য গত ৩বছরে গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রচেষ্টায় নতুন করে শ্রমবাজার উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে। তাতে দেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাবে এবং মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতেও আমাদের শ্রমিকরা গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখতে পারবে। কিন্তু এই অসাধু চক্রের কারণে এই শ্রমবাজার হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ইনকিলাব সুত্র  :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মালয়েশিয়া শ্রমবাজার সর্ষের মধ্যেই ভূত!

আপডেট সময় : ০৩:৪২:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় নষ্ট হচ্ছে সরকারের ইমেজ

 বাংলাদেশে এসোসিয়েশন অব রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হওয়া ও নানা সংকটের জন্য দায়ী বায়রার এই নেতা। তার হাত ধরেই সর্বনাশ নেমে এসেছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে।

অভিযোগ রয়েছে, হাসিনার আমলে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নিয়োগ বাণিজ্যে ১০সিন্ডিকেটের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ছিলেন তিনি। মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাণিজ্যের জন্য বাগিয়ে নিয়েছিলেন নিজের মেডিকেল সেন্টার ওয়েলকাম মেডিকেল। প্রায় ৭০হাজার কর্মীর নাম মাত্র স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এই মৌসুমে আবার পরিচয় লুকিয়ে কমপক্ষে দুইটি লাইসেন্স রয়েছে ১০১ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকায়। সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকাতেও রয়েছে তার এজেন্সি। সাথে আছে নিজস্ব মেডিকেল সেন্টার ওয়েলকাম মেডিকেল।

চলতি বছর ৩১মে শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার পর তিনিসহ আরো কয়েকজন মিলে আবার চেষ্টা করছেন মালয়েশিয়ায় ভিন্ন ফর্মুলায় লোক পাঠানোর শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠনে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার ক্ষমতাশীল একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতাধর কতিপয় নেতার সাথে তাদের কয়েক জনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হয়। জানা যায়, একটি রাজনৈতিক প্রোগ্রামে মোটা অংকের অর্থ স্পন্সর করার সুত্রে দাওয়াত পান ফখরুল ও তার অনুসারীরা। শুধু তাই নয়, দেখা করেছিলেন স্বয়ং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম তার প্রস্তাব নাকচ করে দেয়ায় দেশে ফিরে এখন নিজেকে বঞ্চিত দাবী করে শুরু করেছে নানা অপতৎপরতা।

ফখরুলের বিরুদ্ধে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন টকশো, সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে ভুল এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে শ্রমবাজারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। তার বক্তব্যগুলো তার অনুসারীরা মালয়েশিয়াতে ছড়িয়ে দেয়ায় সম্ভাব্য নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশী শ্রমিক বিমুখ হচ্ছেন।
বায়রার একজন সদস্য জানান, মালয়েশিয়ার জনশক্তি রফতানীতে একক ব্যক্তি হিসেবে সবচাইতে লাভবান ফকরুল ইসলাম। তিনি সবসময় সিন্ডিকেটে ছিলেন। তার আছে নিজস্ব মেডিকেল সেন্টার। আছে একাধিক সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সি। বেনামে ১০১ রিক্রুটিং এজেন্সিরও দুটি তার। তার মেডিকেল সেন্টারের নামে ওয়েলকাম ডায়াগনস্টিক এন্ড মেডিকেল সেন্টার। তার রিক্রুটিং এজেন্সির নাম হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরএল ৪৫২)।

বায়রা সদস্যরা বলেন, একশ’ এক সিন্ডিকেট ভুক্ত তার বেনামী প্রতিষ্ঠান ত্রিবেনি ইন্টারন্যাশনাল ও সেলিব্রেটি ইন্টারন্যাশনাল। যার নেপথ্য মালিক ফখরুল ইসলামের। তিনি নিজের লাইসেন্স সরাসরি ব্যবহার না করে অন্যের নামে ব্যবসা করছেন। অন্য যারা ব্যবসা করেন তাদের লাইসেন্স একটা অথচ তারর লাইসেন্স ২ টা। তাছাড়া অন্য ব্যবসায়ীরা হয়তো মূল ১০১ এজেন্সির মধ্যে অথবা সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ছিলেন। কেউ কেউ শুধু মেডিকেল সেন্টারে ছিলেন। তিনি একমাত্র ব্যক্তি সব জায়গায় আছেন। তিনি প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিকের মেডিকেল চেকআপ করিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি মালয়েশিয়া থেকে ডিমান্ড (চাহিদাপত্র) সংগ্রহ করে বিভিন্ন এজেন্সিকে সরবরাহ করেছেন। তারা ডিমান্ড সংগ্রহ করার শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, তিনি ও তার সহযোগী সিন্ডিকেটের কারণে মালশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে। সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো শুধু একটা টিকেট কেটে শ্রমিকদের কাছ থেকে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা নিয়েছে। অথচ তারা আইনের আওতায় আসছে না। মন্ত্রণালয়ের নজরে আসছে না। একদিকে তারা বলছে, ৬ লাখ টাকা করে শ্রমিক গিয়েছে আবার বলছে তারা দেড় লাখ টাকা ১০১ রিক্রুটিং এজেন্সিভুক্তদের দিয়েছে। অনুমোদিত এজেন্সিগুলো ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে এলোকেশন, জব, ডিমান্ড লেটার, সত্যায়ন, ভিসা করানো, বিটিএমইএর ক্লিয়ারেন্স, নিয়োগানুমতি ও বর্হিগমনসহ যাবতীয় আনুসাঙ্গিক কাজ সম্পাদন করেছে। আর সহযোগী এজেন্সিরা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার একটি টিকেট করে সাড়ে ৪ লাখ টাকা করে নিয়েছে। এসব তথ্য গোপন রেখে এই চক্রটিই আবার বড় বড় কথা বলছে।

অপর এজন ব্যবসায়ী জানান, বায়রার যুগ্মমহাসচিবসহ ওইসব নেতাদের আগে জবাবহিতার আওতায় আনা জরুরী। যেহেতু ওরা বেশি টাকা নিয়েছে এবং কাজটা এনেছে তাহলে টাকা তারাই পাচার করেছে। সহযোগী রিক্রুটিং হিসেবে তারা কাজ কিনেছে। ওয়ার্কারদের অর্থও তারা দিয়েছে। সাপ্লাই চেইন ও মার্কেটিং চেইন তাদের। বেশি অর্থ নেওয়ার জন্য তারাই দায়ী। অর্থপাচার জন্যও তারা দায়ী। অথচ জনসাধারণকে বোকা বানিয়ে এক তরফা তারা নানামুখী অপপ্রচার করছে।

অভিযোগের বিষয়ে বায়রার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে এখন অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন মিডিয়াতে সিন্ডিকেটের বিপক্ষে কথা বলায় নতুন সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আমি মালয়েশিয়ার একজন ব্যবসায়ী। মালয়েশিয়া কর্মী পাঠানো আমার অধিকার। আমি কর্মী পাঠিয়েছি কিন্তু আমি সিন্ডিকেট তো করিনি। বরং সিন্ডিকেট কে চাঁদা দিয়ে আমাকে কর্মী পাঠাতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমি সম্মানিত সদস্যদের অধিকার রক্ষায় কথা বলে যাবো। আমার কোথাও কোনো কর্মীর সমস্যা হলে আমি অবশ্যই দায়িত্ব নেবো। দয়া করে কেউ মাথা নষ্ট করবেন না।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে মাত্র ২২ মাসে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গিয়েছে। এই অভিবাসী শ্রমিকরা দেশের জন্য গত ৩বছরে গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রচেষ্টায় নতুন করে শ্রমবাজার উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে। তাতে দেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাবে এবং মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতেও আমাদের শ্রমিকরা গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখতে পারবে। কিন্তু এই অসাধু চক্রের কারণে এই শ্রমবাজার হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ইনকিলাব সুত্র  :