সাক্ষাতকারে ডাক্তার শঙ্কর : দুই লাখ ৬৮ হাজার কলিং ভিসার কিছু আছে ‘ফলস’
- আপডেট সময় : ০২:০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০২৩
- / 192
প্রবাসী কণ্ঠ প্রতিবেদক:
মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে দেয়া জরুরী সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এখনো বাংলাদেশে দুই লাখ ৬৮ হাজারের মতো চাহিদাপত্র রয়েছে বলে যে কথা বলা হয়েছে তার সাথে একমত পোষন করতে পারছেন না ঢাকা এবং মালয়েশিয়ায় থাকা পেশাদার ব্যবসায়ীরা।
তাদের কারো কারো মতে, ঢাকার ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সীর নামে যেসব চাহিদাপত্র রয়েছে তাদের মধ্যে কিছু ‘ফলস’ ডিমান্ড থাকতে পারে বলে আশংকা করছেন। শুধু তাই নয়, সময় গড়ানোর সাথে সাথে তাদের অনেকের মালয়েশিয়াগামী ফ্লাইটে উঠার ভাগ্য-ও না হতে পারে।
এরআগে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে এক মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এখনো মালয়েশিয়া যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার কর্মী। ইতিমধ্যে প্রায় দুই লক্ষাধিক কর্মী মালয়েশিয়ায় এসে পৌঁছেছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকারের সকল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিবিড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে ২০২১ সালে ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া দ্বি-পাক্ষিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে নতুন কর্মী নিয়োগের বিষয়ে চার বছর পূর্বে জারীকৃত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চুড়ান্ত হওয়ার পর দুই দেশের সংশ্লিষ্ট অফিস সমূহে প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্কিং হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার স্থাপন পূর্বক একই বছরের আগস্ট থেকে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি নতুন কর্মী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়।
মালয়েশিয়াতে বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মীর জরুরী চাহিদার পপরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন, কুয়ালালামপুর কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়ার শুরু থেকে নিবিড় আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র দ্রুতগতিতে সত্যায়ন সম্পন্ন করার চেষ্টা করছে। এছাড়া ২০২৩ সালের ৬ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন ১০,৭৬৩ (দশ হাজার সাতশত তেষট্টি টি সত্যায়ন আবেদনের বিপরীতে ৪,২৩,৫৬৯ (চার লক্ষ তেইশ হাজার পাচশত ঊনসত্তর) জন কর্মীর চাহিদাপত্র সত্যায়ন সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে প্রায় দুই লক্ষাধিক বাংলাদেশী কর্মী মালয়েশিয়া এসে পৌছেছে এবং বাকি প্রায় ২,৬৮,০০০ কর্মী মালয়েশিয়া আসার জন্য প্রক্রিয়াধীন ও অপেক্ষমান রয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রান্তে সত্যায়নের জন্য প্রাপ্ত প্রায় সকল আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কোম্পানির অনুকূলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের জন্য ই-মেইল প্রেরণ করা হয়েছে।
মালয়েশিয়া হাইকমিশন থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে শনিবার রাতে অভিবাসন বিশ্লেষক ডাক্তার শঙ্কর চন্দ্র পোদ্দারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি প্রবাসী কণ্ঠ পত্রিকাকে এপ্রসঙ্গে সংক্ষিপ্ত এক সাক্ষাতকারে বলেন, আমি নিশ্চিত ঢাকার রিক্রুটিং এজেন্সীর মালিকদের কাছে এই মুহুর্তে এতো চাহিদাপত্র নেই। যে পরিমান চাহিদাপত্র হাইকমিশন থেকে থাকার কথা বলা হয়েছে তারমধ্যে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার অপেক্ষায় কিছু কর্মীর চাহিদাপত্র ‘ফলস’ রয়েছে।
কিভাবে ‘ফলস’ চাহিদাপত্র থাকতে পারে জোনতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক নিয়োগকারী কোম্পানী এক কাজ দুইবারও দিয়েছে। যেমন নেপালেও দিয়েছে, আবার একই চাহিদাপত্র বাংলাদেশী এজেন্সীর কাছেও দিয়েছে। এমন চাহিদাপত্রের কারণে অনেকে এখন ঢাকায় প্রসেসিং শুরু করেও কর্মী পাঠাতে পারছে না। এরমধ্যে কোন কোন এজেন্সী কর্মীর কাছ থেকে টাকা নিয়েও না পাঠিয়ে ঘুরাচ্ছে। কারণ চাহিদার বিপরীতে কাজ নাই। কোম্পানী কাজ দিতে পারবে না। আবার কেউ আছে, প্রসেসিং খরচসহ ৪ লাখ টাকা জোগাড় করতে না পারার কারণে অন্য কোথাও লুকিয়ে আছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসলে বাংলাদেশে কি পরিমান কলিং ভিসা (চাহিদাপত্র) থাকতে পারে তা নিশ্চিত হতে চাইলে সেটিও বের করা সহজ। যত কাজ আছে সবগুলো কাজই তো সিন্ডিকেটের সদস্য ১০০ লাইসেন্সের মালিকের কাছে আছে। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হউক, কার কাছে কত ভিসার চাহিদাপত্র আছে। তখনই বের হয়ে আসবে আসল চিত্র। যোগ করেন তিনি।
প্রকাশ সময়: রোববার রাত ২টা ১০ মিনিট