ফ্রান্স জুড়ে তীব্র বিক্ষোভ
- আপডেট সময় : ০৮:৪৭:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩
- / 134
ট্র্যাফিক আইন ভাঙায় ফ্রান্সে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এক আফ্রিকান তরুণকে। দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ১৭ বছরের উত্তর আফ্রিকান তরুণকে প্যারিসের কাছেই হত্যা করা হয়েছে। একটি ট্র্যাফিক সিগন্যালে খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়।
অভিযোগ, ওই যুবক ট্র্যাফিক আইন মানেনি। সে কারণে তাকে গুলি করা হয়েছিল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্স জুড়ে তীব্র অসন্তোষ শুরু হয়েছে। স্বয়ং প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ এর প্রতিবাদ করেছেন। তার কথায়, এই ঘটনার কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত হত্যার চার্জ আনা হয়েছে।
প্যারিসের শহরতলিতে ওই তরুণের অঞ্চলে বৃহস্পতিবার দিনভর প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সাদা জামা পরে রাস্তার দখল নিয়েছিলেন। গাড়ির হর্ন বাজিয়ে তারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। ঘটনাস্থলে প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। শুধু সেখানেই নয়, গোটা প্যারিসজুড়েই বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। পুলিশের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমকে বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, এই দেশে আমরা আর নিরাপদ নই। যে কোনো সময় যে কেউ খুন হয়ে যেতে পারে। ফ্রান্সের স্পিরিট ছিল সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতা। সেই ফ্রান্সের আর কোনো অস্তিত্ব নেই। দেশটা এক পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ঘটনার পর থেকে প্যারিসের দিকে দিকে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এখনো পর্যন্ত অশান্তির জন্য ৪২১জন বিক্ষোভকারীকে পুলিশ আটক করেছে।
বিক্ষোভ ঠেকাতে গিয়ে ১৭০ জন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছেন বলে প্রশাসনের দাবি। একাধিক স্কুল, বাস, পুলিশের ভ্যানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ভাঙার চেষ্টা হয়েছে থানা এবং সরকারি ভবন।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, পুলিশ বাহিনীর ওপর তার সম্পূর্ণ ভরসা আছে। শৃঙ্খলাবদ্ধ এই ফোর্স যথেষ্ট মানবিকতার সঙ্গে বিক্ষোভ দমন করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বললেও একটি বিষয় স্পষ্ট। গত কয়েকবছরে ফ্রান্সে পুলিশের অত্যাচার বেড়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের দাবি, পুলিশের মধ্যে বর্ণবাদ বেড়েছে। তার বলি হচ্ছে বহু মানুষ। এবিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে তারা বিবৃতি দিয়েছে। প্রশাসনকে দ্রুত সতর্ক হওয়ার আবেদন জানিয়েছে।
পুলিশ মুখপাত্র সোনিয়া অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তার বক্তব্য, ২০২১ সালে রাস্তায় গুলি চালানোর ঘটনা ছিল ১৫৭টি, ২০২২ সালে তা কমে ১৩৮ এ এসে দাঁড়িয়েছে। এর থেকেই পরিষ্কার, এ ধরনের ঘটনা ক্রমশ কমছে।
পুলিশ যা-ই বলুক, সাম্প্রতিক ঘটনা ফ্রান্সে যে প্রবল আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে, দ্রুত তা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে না।