লোকে লোকারন্য কক্সবাজার
- আপডেট সময় : ১১:৫২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৩
- / 180
প্রবাসী কণ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ০৬: ৩০ পিএম, ২৮ এপ্রলি ২০২৩
ঈদের প্রথম দুদিন পর্যটক সমাগম কম হলেও তৃতীয় দিন সোমবার (২২ এপ্রিল) থেকে লোকারণ্য হয়ে আছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। বিকেল নাগাদ পর্যটক-দর্শনার্থী মিলে লাখো ভ্রমণপ্রেমীর উপস্থিতি হচ্ছে বেলাভূমিতে। সৈকতের পাশাপাশি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ, ইনানী, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া ও মহেশখালীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও দর্শনার্থীর ভিড় বাড়ছে। এতে চাঙাভাব ফিরেছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। রোববার (৩০ এপ্রিল) পর্যন্ত কক্সবাজারে এমন লোক সমাগম থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ঈদের ছুটি ও পরবর্তী সময়ে গরম উপেক্ষা করে লাখো পর্যটক এসেছেন কক্সবাজারে। হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজগুলো শতভাগ বুকিং না হলেও সন্তোষজনক ব্যবসা হচ্ছে সবার। রেস্তোরাঁ, কুলিং কর্নারসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বেচাবিক্রি বেড়েছে।
লেগুনা বিচ হোটেলের পরিচালক মুহাম্মদ রিদুয়ানুল হক বলেন, ‘গরমেও ব্যবসা ভালোই জমছে। কিন্তু কক্সবাজার থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আয় হচ্ছে সেভাবে পর্যটনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন নেই।’
সরেজমিন দেখা যায়, সৈকতের সুগন্ধা-লাবণীসহ সব পয়েন্টে পর্যটক ও দর্শনার্থীর ভিড়। বৈরী আবহাওয়ায় সমুদ্র উত্তাল। উত্তাল সাগরের ঢেউ উপেক্ষা করে পানিতে নেমে গোসল করছেন অনেক পর্যটক। কেউ কেউ বিচ বাইক ও ঘোড়ার পিঠে চড়ে আনন্দ করছেন।
গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তা ও উদ্ধারে কাজ করা সি-সেইফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার মুহাম্মদ ওসমান বলেন, স্বল্পসংখ্যক লাইফগার্ড কর্মী দিয়ে বিপুলসংখ্যক পর্যটক সামাল দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। সাগরে নামা পর্যটকদের পর্যবেক্ষণে পৃথক চারটি টাওয়ার থেকে ও পানিতে দাঁড়িয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় দুই ডজনের অধিক কর্মী বেলাভূমিতে থাকছেন।
সিলেট থেকে আসা পর্যটক মাহবুব বলেন, ‘ঈদ উদযাপন করে বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার এসেছি। টেলিভিশন ও ইউটিউবে দেখা কক্সবাজারের চেয়ে বাস্তব কক্সবাজারের পরিবেশ আরও মনোরম। খুবই ভালো লাগছে।’
নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী কবির হোসেন (৪৭) বলেন, ‘পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছি। তবে সমুদ্রে নেমে বেশিক্ষণ থাকা যায়নি। ঢেউয়ের উচ্চতা বেশি। বৃহস্পতি ও মঙ্গলবার দুজন পর্যটক মারা গেছে জানতে পেরে ভয় জেগেছে। তাই ১০-১৫ মিনিট পর উঠে এলাম।’
জেলা সদরের বাইরেও হিমছড়ি, দরিয়ানগর, ইনানী, মহেশখালী, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ জেলার সব পর্যটন স্পটে জনসমাগম হচ্ছে।
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক (ইনচার্জ) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ঈদের দিন স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীরা পার্কে এসেছেন। এখন প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছেন দর্শনার্থী।
কক্সবাজারে প্রতিদিন উল্লেখ করার মতো পর্যটক আগমন ঘটছে বলে জানান কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, রোববার পর্যন্ত এ সমাগম থাকবে বলে আমরা আশা করছি। এতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব সেক্টর মিলে সাড়ে ৩-৪ কোটি টাকার বাণিজ্য হতে পারে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, বেলাভূমিসহ পর্যটন স্পটগুলোতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অপরাধ দমনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ভ্রমণপ্রেমীদের নির্মল আনন্দ নিশ্চিত করতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। সবার বিচরণ নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের একাধিক টিম টহলে রয়েছে।
সুত্র : জাগোনিউজ২৪.কম