ঢাকা ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিশিগানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোগান্তি চরমে

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৯:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী ২০২২
  • / 490
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট সিটির কার্পেন্টার রোডের চেরেস্টে রয়েছে অ্যারাবিয়ানদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত “ব্রিজ ওয়েস্ট একাডেমি” নামের চারতলা স্কুল ভবন। ভবনের সামনের দেয়ালজুড়ে শিল্পীর তুলির আছড়ে জীবন্ত হয়ে উঠেছে আমাদের মাতৃভাষার বর্ণমালা গুলো। উঁচু-নিচু সবুজের সমারোহে ঘেরা চা বাগান। কিংবা দুরন্ত কিশোরীর খোপায় গুজে দেয়া শাপলা ফুল। শিল্পীর তুলির আঁচড়ে ভেসে উঠেছে আমাদের শ্রদ্ধা আর ভালবাসার প্রাণের শহীদ মিনার। দেয়ালজুড়ে ভেসে উঠছে যেন টুকরো বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প এলাকা খ্যাত মিশিগানে কাজের সহজলভ্যতা, সামর্থ্যের মধ্যে আবাসন সুবিধা থাকায় লক্ষাধিক অভিবাসী বাংলাদেশিরা মিশিগানে বসবাস করে থাকেন। মিশিগানে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা দেশে বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স প্রেরণ করলেও মিশিগানে স্থায়ী বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিস না থাকায় বাংলাদেশি নাগরিক হিসাবে “নাগরিক সেবা” পেতে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন হাজার হাজার রেমিটেন্স যোদ্ধা।

কমিউনিটির নেতৃস্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিশিগানে কলকারখানা থাকায় দক্ষ এবং অদক্ষ শ্রমিকদের কাজের ব্যাপক সহজলভ্যতা এছাড়া ঘরবাগির ভাড়া সামর্থের মাঝে থাকায় মিশিগানে বাংলাদেশিরা বসবাসে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে থেকে প্রতিদিন বাংলাদেশি অভিবাসীরা! কাজ এবং বসবাসের সুবিধার জন্য মিশিগানে চলে আসছেন। ইতিমধ্যে মিশিগানে লক্ষাধিক বাংলাদেশি জনগোষ্ঠি বসবাস করছেন বলে কমিউনিটির নেতারা জানান।

মিশিগানে কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের দাবি ওঠে ২০০৭ সালে। মিশিগানের বিশিষ্ট কমিউনিটি লিডার ইঞ্জিনিয়ার আহাদ আহমেদ, মো. আহাদ, বিজিত ধর মনি, সৈয়দ মতিউর রহমান শিমু, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী, আশফাকুর রহমান চৌধুরী, ইব্রাহিম জাবেদ চৌধুরী, বাবুল মিয়া সোহেল নেতৃত্ব দিয়ে দাবিকে কমিউনিটিতে বেগবান করেন। কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের দাবিতে গণদাবিতে পরিণত হয়।

২০২০ সালে মিশিগানে বসবাসকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃস্থানীয়রা কস্যুলেট অফিস স্থাপনের দাবিতে ১৪ হাজার স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন দায়িত্বশীলদের কাছে হস্তান্তর করলেও এখন পর্যন্ত মিশিগানে কনস্যুলেট অফিস স্থাপনে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে মিশিগানে এসে বছরে একবার এক সপ্তাহের জন্য অস্থায়ী ভাবে বাংলাদেশ দুতাবাসের লোকজন ওয়াশিংটন থেকে এসে কনস্যুলেট সেবা প্রদান করলেও বিপুল এই জনগোষ্ঠীর জন্য অপ্রতুল বলে অভিযোগ করেন অভিবাসী বাংলাদেশিরা।

হ্যামটামেক সিটিতে বসবাসকারী জয়দীপ চৌধুরী বলেন, পাসপোর্ট এর মেয়াদ চলে গেছে নবায়ন করতে ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দুতাবাসে যেতে হবে। পাসপোর্ট এর মেয়াদ চলে যাওয়ায় বাংলাদেশে যেতে পারছিনা। ওয়াশিংটন যেতে হলে আমার সময় এবং অর্থ লস হবে।

মিশিগানে বসবাসকারী বিশিস্ট কমিউনিটি লিডার ইঞ্জিনিয়ার আহাদ আহমেদ বলেন, আমরাই মিশিগানে কনস্যুলেট অফিসার স্থাপনের জন্য একাধিক রাষ্ট্রদূত এবং রাষ্ট্রের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছি। দাবি বাস্তবায়নে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

কমিউনিটি লিডার ইব্রাহীম জাবেদ চোধুরী বলেন, নিউইয়র্কের পর সব চেয়ে বেশি বাংলাদেশির বসবাস এই মিশিগানে। অবিলম্বে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের ভোগান্তি লাঘবের দাবি জানাই। এ বিষয়ে মিশিগান স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক আহমদ চান বলেন, বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত আছে। মিশিগানে কনস্যুলেট অফিস স্থাপনে স্টেট আওয়ামী লীগ চেষ্টা চালিয়ে যাবে। ——-সুত্র : যুগান্তর

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মিশিগানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোগান্তি চরমে

আপডেট সময় : ০৮:৪৯:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট সিটির কার্পেন্টার রোডের চেরেস্টে রয়েছে অ্যারাবিয়ানদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত “ব্রিজ ওয়েস্ট একাডেমি” নামের চারতলা স্কুল ভবন। ভবনের সামনের দেয়ালজুড়ে শিল্পীর তুলির আছড়ে জীবন্ত হয়ে উঠেছে আমাদের মাতৃভাষার বর্ণমালা গুলো। উঁচু-নিচু সবুজের সমারোহে ঘেরা চা বাগান। কিংবা দুরন্ত কিশোরীর খোপায় গুজে দেয়া শাপলা ফুল। শিল্পীর তুলির আঁচড়ে ভেসে উঠেছে আমাদের শ্রদ্ধা আর ভালবাসার প্রাণের শহীদ মিনার। দেয়ালজুড়ে ভেসে উঠছে যেন টুকরো বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প এলাকা খ্যাত মিশিগানে কাজের সহজলভ্যতা, সামর্থ্যের মধ্যে আবাসন সুবিধা থাকায় লক্ষাধিক অভিবাসী বাংলাদেশিরা মিশিগানে বসবাস করে থাকেন। মিশিগানে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা দেশে বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স প্রেরণ করলেও মিশিগানে স্থায়ী বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিস না থাকায় বাংলাদেশি নাগরিক হিসাবে “নাগরিক সেবা” পেতে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন হাজার হাজার রেমিটেন্স যোদ্ধা।

কমিউনিটির নেতৃস্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিশিগানে কলকারখানা থাকায় দক্ষ এবং অদক্ষ শ্রমিকদের কাজের ব্যাপক সহজলভ্যতা এছাড়া ঘরবাগির ভাড়া সামর্থের মাঝে থাকায় মিশিগানে বাংলাদেশিরা বসবাসে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে থেকে প্রতিদিন বাংলাদেশি অভিবাসীরা! কাজ এবং বসবাসের সুবিধার জন্য মিশিগানে চলে আসছেন। ইতিমধ্যে মিশিগানে লক্ষাধিক বাংলাদেশি জনগোষ্ঠি বসবাস করছেন বলে কমিউনিটির নেতারা জানান।

মিশিগানে কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের দাবি ওঠে ২০০৭ সালে। মিশিগানের বিশিষ্ট কমিউনিটি লিডার ইঞ্জিনিয়ার আহাদ আহমেদ, মো. আহাদ, বিজিত ধর মনি, সৈয়দ মতিউর রহমান শিমু, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী, আশফাকুর রহমান চৌধুরী, ইব্রাহিম জাবেদ চৌধুরী, বাবুল মিয়া সোহেল নেতৃত্ব দিয়ে দাবিকে কমিউনিটিতে বেগবান করেন। কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের দাবিতে গণদাবিতে পরিণত হয়।

২০২০ সালে মিশিগানে বসবাসকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃস্থানীয়রা কস্যুলেট অফিস স্থাপনের দাবিতে ১৪ হাজার স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন দায়িত্বশীলদের কাছে হস্তান্তর করলেও এখন পর্যন্ত মিশিগানে কনস্যুলেট অফিস স্থাপনে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে মিশিগানে এসে বছরে একবার এক সপ্তাহের জন্য অস্থায়ী ভাবে বাংলাদেশ দুতাবাসের লোকজন ওয়াশিংটন থেকে এসে কনস্যুলেট সেবা প্রদান করলেও বিপুল এই জনগোষ্ঠীর জন্য অপ্রতুল বলে অভিযোগ করেন অভিবাসী বাংলাদেশিরা।

হ্যামটামেক সিটিতে বসবাসকারী জয়দীপ চৌধুরী বলেন, পাসপোর্ট এর মেয়াদ চলে গেছে নবায়ন করতে ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দুতাবাসে যেতে হবে। পাসপোর্ট এর মেয়াদ চলে যাওয়ায় বাংলাদেশে যেতে পারছিনা। ওয়াশিংটন যেতে হলে আমার সময় এবং অর্থ লস হবে।

মিশিগানে বসবাসকারী বিশিস্ট কমিউনিটি লিডার ইঞ্জিনিয়ার আহাদ আহমেদ বলেন, আমরাই মিশিগানে কনস্যুলেট অফিসার স্থাপনের জন্য একাধিক রাষ্ট্রদূত এবং রাষ্ট্রের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছি। দাবি বাস্তবায়নে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

কমিউনিটি লিডার ইব্রাহীম জাবেদ চোধুরী বলেন, নিউইয়র্কের পর সব চেয়ে বেশি বাংলাদেশির বসবাস এই মিশিগানে। অবিলম্বে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের ভোগান্তি লাঘবের দাবি জানাই। এ বিষয়ে মিশিগান স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক আহমদ চান বলেন, বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত আছে। মিশিগানে কনস্যুলেট অফিস স্থাপনে স্টেট আওয়ামী লীগ চেষ্টা চালিয়ে যাবে। ——-সুত্র : যুগান্তর