বায়রার নতুন অধ্যায় শুরু: নূর আলী
- আপডেট সময় : ০৫:০০:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
- / 258
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) ২০২২-২৪-এ নতুন নেতৃত্বে আসছেন সরকার রিক্রটিং এজেন্সি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও বায়রা সম্মিলিত ঐক্য পরিষদের প্যানেল প্রধান মোহাম্মদ আবুল বাশার ও সাদিয়া ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান। তাদের নেতেৃত্বে আগামী দুই বছর বায়রা পরিচালিত হবে।
বায়রার সাবেক সভাপতি মো. আবুল বাশারকে নতুন কমিটির সভাপতি ও সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমাকে আবারও মহাসচিব করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আজ রোববার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। বায়রার দুবারের সাবেক সভাপতি ও ইউনিক গ্রুপের এমডি মোহা. নূর আলীর নেতৃত্বে আবুল বাশার প্যানেলসহ বায়রার সাধারণ সদস্যদের বিজয় উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বায়রার দুবারের সাবেক সভাপতি বলেন, ‘আমাদের প্রথম বক্তব্য হচ্ছে, শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট প্রথা বিলুপ্ত করা। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে আর সিন্ডিকেট হতে না পারে, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, মানবপাচার আইনে হয়রানি বন্ধ করা এবং বিদ্যমান আইন পুনঃবিচেনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসসহ যেকোনো দূতাবাসে ব্যবসার প্রয়োজনে বায়রা সদস্যদের লাইসেন্স তালিকাভুক্ত করার ব্যাপারে সহায়তা করবে। নতুন বায়রা সদস্য যারা সদস্যপদের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেছেন, তাদের আড়াই লাখ টাকা প্রণোদনা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বায়রা তহবিল থেকে প্রতিবার সদস্যদের লাইসেন্সের নবায়ন ফি পরিশোধ করা হবে, বায়রা ট্রেনিং সেন্টারের অসমাপ্ত কাজ দ্রুত সমাপ্ত করে তিন মাসের মধ্যে দক্ষ জনশক্তি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। ট্রেনিং সেন্টারটির প্রশিক্ষণ এবং আবাসন মান আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে এবং একে ‘সিটি অ্যান্ড গিল্ডার্স’র তালিকাবুক্ত করা হবে। সাশ্রয়ী মূল্যের এয়ার টিকেট, লেবার ফেয়ারের প্রচলন আমাদের দেশে যাতে শুরু হয় এবং সরকার যাতে এর ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালানো হবে। বিমানবন্দর, বিএমইটি ও মন্ত্রণালয়ে বিদেশ গমনেচ্ছু এবং বিদেশফেরত কর্মীদের কল্যাণের জন্য বায়রার পক্ষ থেকে “হেল্প ডেক্স” স্থাপন করা হবে।’
ইউনিক গ্রুপের এমডি মোহা. নূর আলী বলেন, ‘বায়রার আচরণবিধি বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা দেখছি বায়রার আচরণবিধি ও কালচার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এই কালো কালচার থেকে আমাদের মূল ধারায় অর্থাৎ গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। ১৯৯৪ সালে যখন বায়রা সৃষ্টি হয়েছিল, তখন যে কালচার ডেভেলপ করেছি—তা আস্তে আস্তে অনেক দূর এগিয়ে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে দেখা গেল সিন্ডিকেট ধারা এবং যারা পেশিশক্তি ও টাকার বিনিময়ে সবকিছু করা—এমনকি এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয় এমন কিছু কিছু পাওয়াফুল লোকদের দিয়ে কলঙ্কিত করা সেই কালচার থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে চাই। এ জন্য আচরণবিধি আমাদের খুব বেশি প্রয়োজন। এই আচরণবিধি যদি ঠিক করতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে লাইসেন্স হস্তান্তর করা ছাড়া পথ থাকবে না। গতকাল যারা পরাজিত হয়েছে-তারাই এই কালচারের ধারকবাহক। আমরা এই কালচারকে চিরতরে উৎখাত করতে চাই।’
এ সময় প্যানেল প্রধান মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সৌদি আরবের ব্যবসা খোলার পরে আমরা সবাইকে সমান সুযোগ দিয়েছিলাম। সবাই ব্যবসা করেছেন। মালয়েশিয়ার বাজারটাও সবার জন্য উন্মুক্ত থাকতে হবে। কিন্তু কিছু অসৎ ব্যবসয়ীর কারণে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সবার লাইসেন্সের মূল্য একরকম। আমরা সবাইকে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিতে চাই। একই সঙ্গে আত্মমর্যাদাপূর্ণ বায়রা করতে চাই। আন্তর্জাতিকভাবে বায়রার মর্যাদা বৃদ্ধি করে বায়রা পরিচালনা করতে চাই।’
বায়রা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন যারা: মো. আবুল বাশার ৫০৬ পেয়ে প্রথম হয়েছেন। মো. ফখরুল ইসলাম ৪৮৩ ভোট, মো. আকবর হোসেন মঞ্জুর ৪৬৪ ভোট, নোমান চৌধুরী ৪৬৭ ভোট, মিজানুর রহমান ৪৬৭ ভোট, আলী হায়দার চৌধুরী ৪৬৬ ভোট, রিয়াজ-উল-ইসলাম ৪৬৪ ভোট, শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান ৪৬৩ ভোট, মো. আবুল বারাকাত ভূইয়া-৪৬০, মো. আবু জাফর ৪৫৭ ভোট, মো. কামাল উদ্দিন দিলু ৪৫৫ ভোট, শাহাদাত হোসাইন ৪৫৪ ভোট, মো. টিপু সুলতান ৪৫৪ ভোট, মো. ফরিদ আহমেদ ৪৫২ ভোট, মো. আশরাফ উদ্দিন ৪৪৬ ভোট, মোস্তফা আহমেদ ৪৪৩ ভোট, মো. বেলাল হোসেন মজুমদার ৪৪১ ভোট, ইঞ্জিনিয়ার মো. মূসা কালিম ৪৩৬ ভোট, কাজী মো. মোফিজুর রহমান ৪৩৩ ভোট, হক জহিরুল (জই) ৪৩৩ ভোট, মো. রুহুল আমিন স্বপন ৪২৮ ভোট, আলহাজ্ব মো. আবুল বাশার ৪২৮ ভোট, আরিফুর রহমান ৪২৪ ভোট, রেহেনা পারভিন ৪২১, মো. অলি উল্লাহ ৪২১ ভোট, এম এ সোবাহান ভূইয়া হাসান ৪১৭ ভোট ও রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী ৪১৭ ভোটে জয়ী হয়েছেন।
এর আগে গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গ্রহণের পর রাত আড়াইটায় ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।