মালয়েশিয়া থেকে ফিরতে বাংলাদেশিদের সহায়তা করছে হাইকমিশন
- আপডেট সময় : ০৫:৩২:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ জানুয়ারী ২০২২
- / 582
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (কেএলআইএ) দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন শত শত বাংলাদেশি। যাদের অনেকেই অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিজ দেশে ফেরার প্রয়োজনীয় অনুমোদন এখনো পাননি। আর এজন্য অনেকে মিস করছেন ফ্লাইট। এ সমস্যা সমাধানে সহায়তা দিচ্ছে দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন।
হাইকমিশন সূত্র জানায়, অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে অনেকে বিমানবন্দরে আটকে আছেন। তারা ইমিগ্রেশন বিভাগের রিটার্ন কর্মসূচির অধীনে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ১৩ মাস আগে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির অধীনে নথিবিহীন অভিবাসীদের বেশ কয়েকটি মানদণ্ডের মাধ্যমে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগে অভিবাসীরা দেশটির বিমানবন্দরে অপেক্ষায় আছেন।
মালয়েশিয়ায় অবৈধ বাংলাদেশিসহ বিদেশি শ্রমিকদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার সময়সীমা বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুযোগ বাড়ানো হয়।
অভিবাসীদের অনেকেরই অভিযোগ, এই মুহূর্তে মালয়েশিয়া অভিবাসন চাপ সামলাতে অক্ষম। বিমানবন্দরে অনথিভুক্ত অভিবাসীদের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ২০টি কাউন্টার স্থাপন করা হলেও কাজ করছে মাত্র ১০টি।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, লকডাউন আর বিভিন্ন জটিলতার কারণে অনেকেই এ রিক্যালিব্রেশন রিটার্নের আওতাভুক্ত হতে পারেননি। আমরা মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা বাড়ানোর সুপারিশ করি। দেশটির সংশ্লিষ্টরা আমাদের সুপারিশ আমলে নিয়ে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ‘রিক্যালিব্রেশন রিটার্ন’ কর্মসূচির সময়সীমা বাড়িয়েছে।
জানা গেছে, চলমান রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীরা ইমিগ্রেশনের অনুমতি ছাড়াই নিজ দেশে ফিরতে পারবেন। নিতে হবে না ইমিগ্রেশনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট। অর্থাৎ অবৈধ অভিবাসীরা সরাসরি কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে গিয়ে ৫০০ রিঙ্গিত জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে চলে যেতে পারবেন।
এক্ষেত্রে পাসপোর্ট বা ট্রাভেল পাস এবং ফ্লাইট টিকিট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। অবশ্য ফ্লাইটের ৪৮ ঘণ্টা আগে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে বিমানবন্দরে যেতে হবে। আর বিমানবন্দরে দেশে ফেরার ইমিগ্রেশনের জরিমানা দিয়ে ফ্লাইট ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজির হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যথাসময়ে দেশে ফিরতে হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টরা বিমানবন্দরে সহায়তা করছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যার ফ্লাইট আগে আছে, তিনি যেন সুযোগ পান সে জন্য প্রবাসীদের পরস্পরের প্রতি সহযোগিতা দরকার আছে। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স যাতে যাত্রীকে রেখে না যায় সে জন্য যাত্রীর তালিকা আগেই ইমিগ্রেশনে দিয়ে দিলে ইমিগ্রেশন উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে পারে।
এদিকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস পাওয়া গেছে ইউএস বাংলা, মালয়েশিয়ান এয়ার, মালিন্দ থেকে। তবে একমাত্র ইউএস বাংলার ফ্লাইট যাত্রী না নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে না। তারা যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে রিক্যালিব্রেশন রিটার্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু হয়। সেই থেকে এ পর্যন্ত (২১ ডিসেম্বর) মোট এক লাখ ৯২ হাজার ২৮১ জন অবৈধ অভিবাসী এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন।
নিবন্ধিতদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ৯৯ হাজার ৪৭, বাংলাদেশের ২৬ হাজার ৮২১ ও ভারতের ২৩ হাজার ৮৪৪ জন রয়েছেন। এরই মধ্যে মোট নিবন্ধিতদের মধ্যে এক লাখ ৬২ হাজার ৮২৭ জন অবৈধ অভিবাসী নিজ দেশে ফিরে গেছেন।