ঢাকা ০৯:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জনসংযোগ কর্মী মানেই মুখপাত্র নয়, মুখপাত্র হয়ে উঠতে হয়

  • আপডেট সময় : ০৬:৪২:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / 13
প্রবাসী কণ্ঠ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

আপনার দীর্ঘ কর্মজীবনে প্রতিদিন কারো না কারো সাথে সম্পর্ক তৈরী হবে। পরিচয় হবে টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে কিংবা সরাসরি কিংবা সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। জনসংযোগ পেশা কেমন জানি নতুন পরিচয়ের নেশায় বুদ হয়ে থাকা। একজন জনসংযোগ কর্মী হিসোবে ৩০ বছরের সময়কাল যেন এক অভিজ্ঞতার পসরা সাজিয়ে সম্মুখপানে তাকিয়ে থাকা। নতুন পরিচয়, নতুন অভিজ্ঞতালব্ধ হওয়ার জন্য।

অন্য সকল ডিপার্টমেন্টের এক্সিকিউটিভদের মতো জনসংযোগ কর্মকর্তাদের সকাল সন্ধ্যা অফিসের সময়, কালাকানুন সবই মেনে নিতে হয়। অতিরিক্ত হিসাবে ২৪ ঘন্টাকেই কর্মঘন্টা মেনে নিয়েই দায়িত্ব পালন করতে হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় দিনটি যদি ৩৬ ঘন্টায় হতো তাহলে ভালোই হতো। আজকাল বনেদী খেলা ক্রিকেটে টি-টেন, টি-টুয়েন্টি, ওয়ানডে দিনদিন জনপ্রিয় উঠছে। কিন্তু টেস্ট ম্যাচের জৌলুস কিন্তু রয়ে গেছে আদি ও অকৃত্রিমতায়। জনসংযোগ পেশাটা ঠিক সেই রকমই একটা টেস্ট ম্যাচ। ধৈর্য্যের টেস্ট ম্যাচ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমহারে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া। আর যদি কোনো সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের জনসংযোগ পেশা হয়ে থাকে তবে তো আপনাকে যেকোনো সময়ে যেকোনো বিষয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

জনসংযোগ পেশাটাই এমন আপনাকে প্রতিষ্ঠানের সব বিষয়ে কিংবা আপনার প্রতিষ্ঠান যে ধরনের ব্যবসার সাথে জড়িত সেই ব্যবসা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকতে হয়। উদাহরণ হিসেবে- এভিয়েশন সেক্টর এর ব্যবসার কথাই উল্লেখ করা হলো- একজন সেলস্ কিংবা মার্কেটিং প্রতিনিধি সেলস অথবা মার্কেটিং বিষয়ক সম্যক জ্ঞান থাকলেই যথেষ্ট, একাউন্টিং কিংবা রেভিনিউ ডিপর্টেমেন্টের কাজের ধরণও হিসাব নিকাশ সংক্রান্ত যেখানে কাজের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা পাইলট উভয়েরই নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষায়িত হতে হয়। আবার এডমিন কিংবা এইচআর ডিপার্টমেন্টেরও কাজের সীমাবন্ধতা রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য বিভাগ যেমন পারচেজ, ক্যাটেরিং, ইন-ফ্লাইট সার্ভিস, কাস্টমার সার্ভিস, সিকিউরিটি, ক্লিনিং, ট্রান্সপোর্ট প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে আলাদা আলাদা দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু পাবলিক রিলেশন ডিপার্টমেন্ট কাজের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।

জনসংযোগ কর্মীকে যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারে। প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করতে হয়। খুব বেশী সচেতনতার সাথে বক্তব্য রাখতে হয়। ভুল বক্তব্য প্রতিষ্ঠানকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে। কঠিন সময়ে সাবলিলভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারাই একজন জনসংযোগবিদ যে অন্যদের থেকে আলাদা তাই প্রকাশ করা।

একজন জনসংযোগ কর্মীর প্রয়োজনীয়তা একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য সবসময়ই আছে। যেমন প্রয়োজন ভালো সময়ে তেমনি প্রয়োজন মন্দ সময়ে। তবে ভালো সময়ের চেয়ে মন্দ সময়ে জনসংযোগ কর্মীকে খুব বেশী প্রয়োজন বলেই মনে হয়। প্রতিষ্ঠানের যেকোনো মন্দ সময়ে একজন জনসংযোগ কর্মী তার সুসম্পর্ক দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে ভালো সময়ের দিকে এগিয়ে নিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখতে পারে। একজন জনসংযোগবিদ তার সাবলিল উপস্থাপনা দিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে সকল স্তরের নাগরিকদের নিকট সঠিক বার্তা পৌঁছানোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে তুলে ধরতে পারেন। যা অন্য কর্মকর্তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না।

প্রয়োজন থাকলেই সংবাদকর্মীদের সাথে সম্পর্ক তৈরী করা আর প্রয়োজন শেষ হলেই সম্পর্ক শেষ এই নীতিতে যারা বিশ্বাস করেন তাদের জন্য জনসংযোগ পেশা নয়। যারা নির্দিষ্ট সময় মেনে জনসংযোগ পেশায় কাজ করতে চান তাদের জন্যও এই পেশা খুব বেশী মানানসই হবে না।

সরকারী কিংবা বেসরকারী উভয় সেক্টরেই জনসংযাগ কর্মীকে অফিস সময়ের বাহিরেও সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখতে হয় নিজেকে। আপনি হয়তো রাত ১১টা কিংবা ১২ টায় ও ফোন কল পেতে পারেন। আপনার প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ পরিচয়ের সূত্র ধরে কেউ জরুরী একটা সেবার জন্য আপনার দারস্থ হয়ে থাকলে প্রয়োজন বুঝে সহায়তা করা। এটাও জনসংযোগ কর্মীর সম্পর্কের উপর নির্ভর করে। কারো সাথে পরিচয় হবে প্রফেশনালী কিন্তু সম্পর্ক তৈরী হবে পারসোনালী। যে সম্পর্কটা থাকবে আজীবন। ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারনে লাভবান হবে প্রতিষ্ঠান।

শুধুমাত্র এক্সটার্নাল রিলেশন ভালো রাখতে হবে ব্যাপারটা আসলে তা নয়, আপনার ইন্টারনাল রিলেশনও অনেক ভালো হতে হবে। ইন্টারনাল রিলেশন যতবেশী শক্তিশালী হবে আপনি জনসংযোগ কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠানে আপনার ভূমিকা ততবেশী গ্রহণযোগ্য হবে। আপনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কোনো বার্তা খুব সহজেই মিডিয়ার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন, যা প্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো কর্মীর পক্ষে সম্ভব নয়।

ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে বড় মিডিয়া কিংবা ছোট মিডিয়া বলতে কিছু নেই। একজন জনসংযোগ কর্মী হিসেবে আপনাকে সব মিডিয়াই সমান ধারনা পোষণ করতে হবে। কোনো ঘটনা কিংবা দূর্ঘটনার সংবাদ প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে সত্য ঘটনা তুলে ধরাই কাম্য হবে নতুবা ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে নানাবিধ কল্পকাহিনীর সম্মুখীন হতে পারেন, যা ব্যবসার সুনাম ক্ষুন্ন হতে পারে, ভবিষ্যৎ ব্যবসার জন্য ক্ষতির কারন হতে পারে। সত্য সংবাদ প্রকাশে দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠান লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

প্রত্যেকটি মিডিয়া হাউজের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এমনকি সংবাদকর্মীদের কমিউনিটি বেজড্ অনেক প্রতিষ্ঠান থাকে তাদের সাথেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে যেমন জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ক্রাইম রিপোটার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্র্যাব), ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ইত্যাদি। একজন জনসংযোগ কর্মী হিসেবে সংবাদকর্মীদের মনোভাব অনুধাবন করা খুবই জরুরী।

জনসংযোগ কর্মীর কাজ এবং সময়ের কোনো রুটিন মাফিক সীমাবদ্ধতা নেই। সবসময়ই ফ্রি আবার আবার সবসময়ই ব্যস্ত। প্রতি মূহূর্তেই ব্যস্ততার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। কঠিন সময়েও উপলব্ধি এমনই হওয়া উচিত- কথার মাধ্যমেই আপনি একজনকে কষ্ট দিতে পারেন আবার কথার মাধ্যমেই আপনি একজনকে সন্তুষ্টি দিতে পারেন। কথা বলবেন আপনি। আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি কষ্ট দিবেন নাকি সন্তুষ্টি দিবেন।

একজন জনসংযোগকর্মী আপাদমস্তক কোম্পানীর মুখপাত্র হয়ে উঠার জন্য আপনাকে সৎ, নিষ্ঠা, সময়ানুবর্তিতা, অভিজ্ঞতালব্ধ হওয়া খুবই জরুরী।

লেখক
মো কামরুল ইসলাম
মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

জনসংযোগ কর্মী মানেই মুখপাত্র নয়, মুখপাত্র হয়ে উঠতে হয়

আপডেট সময় : ০৬:৪২:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

 

আপনার দীর্ঘ কর্মজীবনে প্রতিদিন কারো না কারো সাথে সম্পর্ক তৈরী হবে। পরিচয় হবে টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে কিংবা সরাসরি কিংবা সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। জনসংযোগ পেশা কেমন জানি নতুন পরিচয়ের নেশায় বুদ হয়ে থাকা। একজন জনসংযোগ কর্মী হিসোবে ৩০ বছরের সময়কাল যেন এক অভিজ্ঞতার পসরা সাজিয়ে সম্মুখপানে তাকিয়ে থাকা। নতুন পরিচয়, নতুন অভিজ্ঞতালব্ধ হওয়ার জন্য।

অন্য সকল ডিপার্টমেন্টের এক্সিকিউটিভদের মতো জনসংযোগ কর্মকর্তাদের সকাল সন্ধ্যা অফিসের সময়, কালাকানুন সবই মেনে নিতে হয়। অতিরিক্ত হিসাবে ২৪ ঘন্টাকেই কর্মঘন্টা মেনে নিয়েই দায়িত্ব পালন করতে হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় দিনটি যদি ৩৬ ঘন্টায় হতো তাহলে ভালোই হতো। আজকাল বনেদী খেলা ক্রিকেটে টি-টেন, টি-টুয়েন্টি, ওয়ানডে দিনদিন জনপ্রিয় উঠছে। কিন্তু টেস্ট ম্যাচের জৌলুস কিন্তু রয়ে গেছে আদি ও অকৃত্রিমতায়। জনসংযোগ পেশাটা ঠিক সেই রকমই একটা টেস্ট ম্যাচ। ধৈর্য্যের টেস্ট ম্যাচ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমহারে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া। আর যদি কোনো সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের জনসংযোগ পেশা হয়ে থাকে তবে তো আপনাকে যেকোনো সময়ে যেকোনো বিষয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

জনসংযোগ পেশাটাই এমন আপনাকে প্রতিষ্ঠানের সব বিষয়ে কিংবা আপনার প্রতিষ্ঠান যে ধরনের ব্যবসার সাথে জড়িত সেই ব্যবসা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকতে হয়। উদাহরণ হিসেবে- এভিয়েশন সেক্টর এর ব্যবসার কথাই উল্লেখ করা হলো- একজন সেলস্ কিংবা মার্কেটিং প্রতিনিধি সেলস অথবা মার্কেটিং বিষয়ক সম্যক জ্ঞান থাকলেই যথেষ্ট, একাউন্টিং কিংবা রেভিনিউ ডিপর্টেমেন্টের কাজের ধরণও হিসাব নিকাশ সংক্রান্ত যেখানে কাজের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা পাইলট উভয়েরই নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষায়িত হতে হয়। আবার এডমিন কিংবা এইচআর ডিপার্টমেন্টেরও কাজের সীমাবন্ধতা রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য বিভাগ যেমন পারচেজ, ক্যাটেরিং, ইন-ফ্লাইট সার্ভিস, কাস্টমার সার্ভিস, সিকিউরিটি, ক্লিনিং, ট্রান্সপোর্ট প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে আলাদা আলাদা দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু পাবলিক রিলেশন ডিপার্টমেন্ট কাজের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।

জনসংযোগ কর্মীকে যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারে। প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করতে হয়। খুব বেশী সচেতনতার সাথে বক্তব্য রাখতে হয়। ভুল বক্তব্য প্রতিষ্ঠানকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে। কঠিন সময়ে সাবলিলভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারাই একজন জনসংযোগবিদ যে অন্যদের থেকে আলাদা তাই প্রকাশ করা।

একজন জনসংযোগ কর্মীর প্রয়োজনীয়তা একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য সবসময়ই আছে। যেমন প্রয়োজন ভালো সময়ে তেমনি প্রয়োজন মন্দ সময়ে। তবে ভালো সময়ের চেয়ে মন্দ সময়ে জনসংযোগ কর্মীকে খুব বেশী প্রয়োজন বলেই মনে হয়। প্রতিষ্ঠানের যেকোনো মন্দ সময়ে একজন জনসংযোগ কর্মী তার সুসম্পর্ক দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে ভালো সময়ের দিকে এগিয়ে নিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখতে পারে। একজন জনসংযোগবিদ তার সাবলিল উপস্থাপনা দিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে সকল স্তরের নাগরিকদের নিকট সঠিক বার্তা পৌঁছানোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে তুলে ধরতে পারেন। যা অন্য কর্মকর্তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না।

প্রয়োজন থাকলেই সংবাদকর্মীদের সাথে সম্পর্ক তৈরী করা আর প্রয়োজন শেষ হলেই সম্পর্ক শেষ এই নীতিতে যারা বিশ্বাস করেন তাদের জন্য জনসংযোগ পেশা নয়। যারা নির্দিষ্ট সময় মেনে জনসংযোগ পেশায় কাজ করতে চান তাদের জন্যও এই পেশা খুব বেশী মানানসই হবে না।

সরকারী কিংবা বেসরকারী উভয় সেক্টরেই জনসংযাগ কর্মীকে অফিস সময়ের বাহিরেও সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখতে হয় নিজেকে। আপনি হয়তো রাত ১১টা কিংবা ১২ টায় ও ফোন কল পেতে পারেন। আপনার প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ পরিচয়ের সূত্র ধরে কেউ জরুরী একটা সেবার জন্য আপনার দারস্থ হয়ে থাকলে প্রয়োজন বুঝে সহায়তা করা। এটাও জনসংযোগ কর্মীর সম্পর্কের উপর নির্ভর করে। কারো সাথে পরিচয় হবে প্রফেশনালী কিন্তু সম্পর্ক তৈরী হবে পারসোনালী। যে সম্পর্কটা থাকবে আজীবন। ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারনে লাভবান হবে প্রতিষ্ঠান।

শুধুমাত্র এক্সটার্নাল রিলেশন ভালো রাখতে হবে ব্যাপারটা আসলে তা নয়, আপনার ইন্টারনাল রিলেশনও অনেক ভালো হতে হবে। ইন্টারনাল রিলেশন যতবেশী শক্তিশালী হবে আপনি জনসংযোগ কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠানে আপনার ভূমিকা ততবেশী গ্রহণযোগ্য হবে। আপনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কোনো বার্তা খুব সহজেই মিডিয়ার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন, যা প্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো কর্মীর পক্ষে সম্ভব নয়।

ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে বড় মিডিয়া কিংবা ছোট মিডিয়া বলতে কিছু নেই। একজন জনসংযোগ কর্মী হিসেবে আপনাকে সব মিডিয়াই সমান ধারনা পোষণ করতে হবে। কোনো ঘটনা কিংবা দূর্ঘটনার সংবাদ প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে সত্য ঘটনা তুলে ধরাই কাম্য হবে নতুবা ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে নানাবিধ কল্পকাহিনীর সম্মুখীন হতে পারেন, যা ব্যবসার সুনাম ক্ষুন্ন হতে পারে, ভবিষ্যৎ ব্যবসার জন্য ক্ষতির কারন হতে পারে। সত্য সংবাদ প্রকাশে দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠান লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

প্রত্যেকটি মিডিয়া হাউজের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এমনকি সংবাদকর্মীদের কমিউনিটি বেজড্ অনেক প্রতিষ্ঠান থাকে তাদের সাথেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে যেমন জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ক্রাইম রিপোটার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্র্যাব), ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ইত্যাদি। একজন জনসংযোগ কর্মী হিসেবে সংবাদকর্মীদের মনোভাব অনুধাবন করা খুবই জরুরী।

জনসংযোগ কর্মীর কাজ এবং সময়ের কোনো রুটিন মাফিক সীমাবদ্ধতা নেই। সবসময়ই ফ্রি আবার আবার সবসময়ই ব্যস্ত। প্রতি মূহূর্তেই ব্যস্ততার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। কঠিন সময়েও উপলব্ধি এমনই হওয়া উচিত- কথার মাধ্যমেই আপনি একজনকে কষ্ট দিতে পারেন আবার কথার মাধ্যমেই আপনি একজনকে সন্তুষ্টি দিতে পারেন। কথা বলবেন আপনি। আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি কষ্ট দিবেন নাকি সন্তুষ্টি দিবেন।

একজন জনসংযোগকর্মী আপাদমস্তক কোম্পানীর মুখপাত্র হয়ে উঠার জন্য আপনাকে সৎ, নিষ্ঠা, সময়ানুবর্তিতা, অভিজ্ঞতালব্ধ হওয়া খুবই জরুরী।

লেখক
মো কামরুল ইসলাম
মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স